তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান সরকার জানিয়েছেন, পোশাকশিল্পের শতভাগ কারখানায় বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে।
আজ শনিবার (৩০ এপ্রিল) তিনি এ কথা জানান।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সবার ঐকান্তিক সহযোগিতায় পোশাকশিল্পের শ্রমিক ভাই-বোনেরা পরিবার পরিজন নিয়ে আসন্ন ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে যাচ্ছেন।
পোশাকখাতের উদোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পূর্ববর্তী বছরের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে শত সীমাবদ্ধতার মাঝে থেকেও আপনারা শ্রমিক ভাই-বোনদের যথাযথ পাওনা পরিশোধ করেছেন, এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।
ফারুক হাসান বলেন, শতভাগ কারখানায় উৎসবভাতা প্রদান এবং সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এপ্রিলের অগ্রিম বেতন প্রদান করা হয়েছে। শতভাগ কারখানায় ঈদের ছুটি প্রদান করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ঈদ উপলক্ষে উদ্যোক্তারা এলাকাভিত্তিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে ও দিনে দু’বেলায় ছুটি দিচ্ছেন। গত বুধবার থেকে শ্রমিকরা ছুটিতে যাওয়া শুরু করেছেন। আজকের মধ্যেই সব শ্রমিক ভাই-বোন ঢাকা ছাড়বেন।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, প্রাপ্ত সংবাদ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন তারিখে ও ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ছুটি দেওয়ার কারনে এবার মহাসড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ কম পড়েছে। মহাসড়কগুলোতে যানজট কমাতে এবং ঈদযাত্রা সহজ ও নিরাপদ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায়, বিশেষ করে জনস্বার্থ বিঘ্নিত না করে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সুচারুভাবে পরিচালনা করার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
তিনি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্যও সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সমাপ্ত হলে আগামী দিনে মহাসড়কগুলোতে যানজট পরিস্থিতির অনেকাংশে উন্নতি হবে এবং মানুষ আরও নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রা করতে পারবে।
বিজিএমইএ’র অনুরোধের প্রেক্ষিতে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের সুবিধার্থে ২৯ এপ্রিল ও ৩০ এপ্রিল ব্যাংকিং কার্যক্রম সীমিত পরিসরে চালু রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে এবং পোশাকশিল্পের আমদানি-রপ্তানিসহ জরুরি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য ২৯ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত (ঈদের দিন ছাড়া) সরকারি ছুটির সময়ে সকল কাস্টম হাউজ ও শুল্ক স্টেশনসমূহ খোলা রাখার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ফারুক হাসান।
একই সঙ্গে রপ্তানির স্বার্থে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর বস্ত্র বিভাগের সেবা সাপ্তাহিক ছুটির দিন (৩০ এপ্রিল) চালু রাখার জন্য এবং আসন্ন ঈদুল ফিতরের ছুটিকালীন ও তৎপরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম ২৪/৭ চালু রাখার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, গত দুই বছরের তুলনায় কোভিড পরিস্থিতি বর্তমানে অনেকটা স্বাভাবিক থাকায় এবছর অধিকসংখ্যক শ্রমিক ভাই-বোন পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করার জন্য গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। আমরা প্রতিটি উদ্যোক্তা কামনা করছি, প্রতিটি শ্রমিক ভাই-বোন যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে পরিবার-পরিজন নিয়ে হাসিমুখে ঈদ উদযাপন করতে পারেন।
বিজিএমইএ সভাপতি ঘরমুখো মানুষকে মাস্ক পরিধানসহ যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ঈদে বাড়িফেরা নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস, ট্রেন ও লঞ্চগুলো যাতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করে, সেজন্য নজরদারি জোরদার করার জন্যও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে অনুরোধ জানিয়েছেন।