রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষায় আন্দোলনকারী সৈয়দা রত্না ও তাঁর ছেলেকে আটকের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি দিয়েছেন দেশের ২৪ বিশিষ্টজন। আজ শনিবার গণমাধ্যমে চিঠিটি পাঠানো হয়।
সৈয়দা রত্না ও তাঁর শিশুকে তুলে আনা এবং বেআইনিভাবে আটক, মুচলেকা নেওয়া ও হয়রানি করার ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানানো হয় বিবৃতিতে।
গত রোববার মাঠটি রক্ষার দাবিতে আন্দোলনকারী সৈয়দা রত্না ও তাঁর কিশোর ছেলেকে পুলিশ ধরে নিয়ে ১৩ ঘণ্টা কলাবাগান থানায় আটকে রাখেন। পরে প্রতিবাদের মুখে মধ্যরাতে মুচলেকা নিয়ে তাঁদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গত বৃহস্পতিবার জানান, তেঁতুলতলা মাঠে আর কোনো নির্মাণকাজ হবে না। জায়গাটি যেভাবে ছিল, সেভাবেই থাকবে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আজ বিশিষ্টজনদের চিঠিতে সরকারি সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যে কোনো ব্যক্তির প্রতি নিষ্ঠুরতা নিষিদ্ধ। যদি আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন নাবালক হয়, তবে পুলিশ কর্মকর্তাকে শিশু আইন, ২০১৩ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত বিধান মেনে চলতে হবে। সংবিধানে শিশুদের প্রতি সব ধরনের নিষ্ঠুরতা ও অবমাননাকর শাস্তিকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী, এভাবে কোনো শিশুকে গ্রেপ্তার ও আটক করা বেআইনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক কাউকে গ্রেপ্তার করলে তার নিকটের আত্মীয়স্বজনকে জানাতে হবে। কিন্তু কলাবাগান থানা রত্নাকে আটকের পর তাঁর শিশুসন্তানকে আটক করে। সৈয়দা রত্নার সঙ্গে সারাদিন কাউকে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। এটি অনৈতিক ও বেআইনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অমান্য করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন হামিদা হোসেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধূরী, মোবাশ্বের হোসেন, জেড আই খান, শিরীন হক, পারভীন হাসান, ডা. মালেকা বানু, ইফতেখারুজ্জামান, খুশী কবির, ফেরদৌস আজিম, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শামসুল হুদা, রেহনুমা আহমেদ, শহিদুল আলম, সারা হোসেন, জাকির হোসেন, সামিনা লুৎফা, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, আলমগীর কবীর, আরিফ নূর, রুনু আলী ও জামসেদ আনোয়ার।
লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম চিঠিটি গণমাধ্যমে পাঠান।