সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর বর্ষীয়ান সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিত ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তাঁর ভাই ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার মধ্যরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বার্তায় জানানো হয়, আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর গুলশান আজাদ মসজিদে আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংসদ প্লাজায় তাঁর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার দুপুর ১২টায় সাবেক এই অর্থমন্ত্রীর মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে দাফনের জন্য তাঁর মরদেহ সিলেটে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি একজন খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ, লেখক ও ভাষাসৈনিক ছিলেন। আওয়ামী লীগের সরকারের আমলে টানা দুই মেয়াদে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মুহিত।
তিনি টানা ১০ বছর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। দেশের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে বেশি সময় যাবত অর্থমন্ত্রী ছিলেন। এরশাদ সরকারের আমলে দুটিসহ বারোটি বাজেট দিয়ে রেকর্ড তৈরি করেন তিনি।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মুহিত। ২০০৯-১০ অর্থবছরে এক লাখ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন তিনি। ক্রমান্বয়ে বাজেটের আকার বাড়িয়ে যাওয়ার আগে চার লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়ে যান তিনি।
আবদুল মুহিত ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি অর্জন করেন। পরের বছর একই বিষয়ে অর্জন করেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। ছাত্রজীবনে সলিমুল্লাহ হল ছাত্র সংসদে ছিলেন। ১৯৫৬ সালে তিনি যোগ দেন সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তানে (সিএসপি)।
১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত থাকার সময় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন মুহিত। এরপর প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন করেন। এ কারণে তাঁকে ২০১৬ সালে রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’ দেওয়া হয়। তাঁর লেখা বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ৪০টির মতো বই রয়েছে।