চট্টগ্রাম বন্দরের সাহসী পদক্ষেপে রক্ষা পেল আট শত কোটি টাকার রপ্তানি পণ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

রপ্তানি পণ্য ভরা সহস্রাধিক কন্টেইনার নিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরে ডুবতে বসা একটি জাহাজ উদ্ধার করে ডকে ভেড়িয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

কুতুবদিয়ার অদূরে এক পাশে পানি ঢুকে কাত হয়ে যাওয়া ভিয়েতনামের পতাকাবাহী জাহাজটিকে বুধবার ছয়টি বিশেষ জলযানের সাহায্যে জেটিতে নিয়ে আসা হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের এই সাহসী পদক্ষেপের ফলে রক্ষা পেয়েছে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার রপ্তানি পণ্য।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, গত ১৪ এপ্রিল রপ্তানি পণ্যবোঝাই কনটেইনার নিয়ে ভিয়েতনামের মালিকানাধীন এমভি হাইয়ান সিটি নামের জাহাজটি সিঙ্গাপুরে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়ার কাছে একটি তেলবাহী ট্যাংকারের সঙ্গে জাহাজটির সংঘর্ষ হলে একটি খালি কনটেইনার সাগরে পড়ে যায়।

দুর্ঘটনায় পড়ে জাহাজটি এক পাশে পানি ঢুকে কাত হয়ে যাওয়ায় ঝড়ে বা প্রবল ঢেউয়ে সেটি ডুবে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। ঝুঁকিতে থাকা জাহাজটির বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে দফায় দফায় বৈঠকে বসে চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ।

বন্দর সূত্র বলছে, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহানের সঙ্গে বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জাহাজের মালিক প্রতিনিধি, স্থানীয় এজেন্ট, উদ্ধারকারী সংস্থা, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ সব সংস্থার প্রতিনিধিকে নিয়ে বৈঠক করে জাহাজটিকে বিশেষ ব্যবস্থায় জেটিতে ভেড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বুধবার দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজটি বিশেষ ব্যবস্থায় বেসরকারি কর্ণফুলী ড্রাই ডক জেটিতে ভেড়ানো হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দরে এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ উদ্ধার কার্যক্রম আগে ঘটেনি। ওই জাহাজে ১১৫৬টি কনটেইনার রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৭০০ একক কনটেইনারে রয়েছে তৈরি পোশাকসহ রপ্তানি পণ্য। বন্দরের সাহসী উদ্যোগে জাহাজটি রক্ষার পাশাপাশি প্রায় ৮০০ কোটি টাকার রপ্তানি পণ্যও রক্ষা পেয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান মহোদয়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে জাহাজটি উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের দুজন পাইলট এই উদ্ধার কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন।

তিনি আরও বলেন, দেশের ট্রেডের স্বার্থে ক্রিটিক্যাল সিচুয়েশনে (ঝঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি) পড়া জাহাজটি উদ্ধার করে আনা হয়েছে। এতে করে একদিকে রপ্তানিকারকেরা আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছেন অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমাও ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে।

শেয়ার করুন