সচিবালয়ে ঈদের আমেজ, উপস্থিতিও কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

সচিবালয়ে ঈদের আমেজ
সচিবালয়ে ঈদের আমেজ। ফাইল ছবি

ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে আজ খুলেছে দেশের সব সরকারি অফিস-আদালত। তবে ঈদ পরবর্তী প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে বিরাজ করছে ঈদের আমেজ। সকালে অফিসে এসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। সরেজমিনে সকাল থেকে সচিবালয় চত্বর, ভবনের করিডোর এবং বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়েছে।

ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিও খুব কম। সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের ধারণা, সচিবালয়ে আজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি ৫০ শতাংশের মতো।

universel cardiac hospital

গত মঙ্গলবার (৩ মে) দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয় ছুটি। টানা ৬ দিনের ছুটি শেষে হয় বুধবার (৪ মে)।

সচিবালয়ে সকাল পৌঁনে ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা গেছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি খুবই কম। অনেক কক্ষই ফাঁকা। কোনো কোনো কক্ষে এখনো ঝুলছে তালা।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৫ মে) অফিস করার পর আবার দু’দিন সাপ্তাহিক ছুটি। অনেকেই বৃহস্পতিবার ঐচ্ছিক ছুটি নিয়ে টানা ৯ দিনের ছুটি উপভোগ করছেন। আগামী রোববার থেকে সচিবালয়ে কর্মব্যস্ততা পুরোদমে শুরু হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২২৬ নম্বর কক্ষে পাঁচজন কর্মকর্তার বসার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, দুজন মাত্র অফিস করছেন। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ১২২ নম্বর কক্ষটিও ফাঁকা।

যারা অফিসে এসেছেন তারাও আজ খোশগল্প করেই সময় কাটাচ্ছেন। ভূমি মন্ত্রণালয় ৩০১ নম্বর কক্ষের সবাইকে একসঙ্গে কম্পিউটারে ইউটিউবে নাটক দেখতে দেখা গেছে।

সচিবালয়ে গাড়ি রাখার স্থানগুলোও অন্যান্য দিনের তুলনায় ফাঁকা। চার নম্বর ভবনের দক্ষিণ, ছয় নম্বর ভবনের উত্তর পাশের পার্কিংয়ের স্থানসহ আশপাশের জায়গাগুলোতেও গাড়ির সংখ্যা কম। নেই মানুষের পদচারণা। দর্শনার্থী অভ্যর্থনা কেন্দ্রে কারও উপস্থিতি চোখে পড়েনি।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরিচ্ছন্নকর্মীদের সচিবালয়ের বিভিন্ন করিডোর পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। সচিবালয়ে লিফটম্যান ও বিভিন্ন কক্ষের দরজা খুলে দেওয়ার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা জানিয়েছেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি অনেক কম।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রায় অর্ধেক কর্মকর্তা-কর্মচারীই আজ আসেননি। আমরা যে কক্ষে বসি সেখানে চারজনের মধ্যে এসেছেন দুজন। বেশিরভাগই ছুটিতে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ঈদের পরে প্রথম কর্মদিবস মোটামুটি এমনই হয়ে থাকে। খুব একটা কাজ হয় না, আবার অনেকেই ছুটিতে থাকেন।

সকাল ১০টা ৫ মিনিটের দিকে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুককে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে দেখা যায়। বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এরও আগে সচিবালয়ে আসেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

এদিন ঈদ পরবর্তী প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে আসা মন্ত্রী-সচিবরাও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

শেয়ার করুন