নাহিদকে রড দিয়ে পেটান মাহমুদুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ হোসেনকে এক তরুণ কোপাচ্ছেন, আরেকজন রড দিয়ে পেটানোর পর ঘটনাস্থল ত্যাগ করছেন। এটি ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সময় ধারণ করা একটি ভিডিও ফুটেজের দৃশ্য। র‌্যাব বলছে, ওই দুই তরুণের একজন মাহমুদুল হাসান সিয়াম, যিনি নাহিদকে রড দিয়ে পেটাচ্ছিলেন। তিনি ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাকে গত বুধবার শরীয়তপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে নাহিদকে কোপানোর যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে, সেই বাশার ইমনকে শনাক্ত করা গেলেও এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

এ নিয়ে নাহিদ হত্যার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। তারাও ঢাকা কলেজের ছাত্র।
ডিবির হাতে গ্রেপ্তার পাঁচজনই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। তবে সর্বশেষ গ্রেপ্তার মাহমুদুল হাসানের রাজনৈতিক পরিচয় নেই বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

এ ছাড়া নিউমার্কেটের যে দুই দোকান কর্মচারীর বাগ্‌বিতণ্ডা থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল, তাদেরও গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত বুধবার কক্সবাজার থেকে মোয়াজ্জেম হোসেন সজীব ও মেহেদী হাসান বাপ্পি নামের এই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব বলছে, তারা বেশভূষা পরিবর্তন করে কক্সবাজারে আত্মগোপনে ছিলেন। তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে চাকরির জন্য চেষ্টাও করছিলেন।

তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মাহমুদুল হাসান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাহিদকে রড দিয়ে পেটানোর কথা স্বীকার করেছেন। তার বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়ায়। তিনি শরীয়তপুরে এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংঘর্ষের সময় নাহিদ প্রথমে ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হন জানিয়ে র‌্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন বলেন, সংঘর্ষের সময় নাহিদ নূরজাহান মার্কেটের সামনের ফুটপাতে পড়ে যান। এ সময় তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। ওই দিনই তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। হামলার ঘটনার ফুটেজ দেখে মাহমুদুল হাসান ও বাশার ইমনকে শনাক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও অনেক তথ্য পাওয়া গেছে।

গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় সংঘর্ষের সূত্রপাতের বিষয়ে র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নিউমার্কেটে পাশাপাশি দুটি ফাস্ট ফুডের দোকানের কর্মচারীদের মধ্যে ইফতারি বিক্রয়ের টেবিল বসানো নিয়ে বিতণ্ডা থেকে হাতাহাতি হয়। প্রতিশোধ নিতে দুই দোকানকর্মী মোয়াজ্জেম ও মেহেদী ফোন করে তাদের পরিচিত ‘দুষ্কৃতকারীদের’ আসতে বলেন। পরে দুই দোকানের কর্মচারীদের মধ্যে মারামারি হয়। একপর্যায়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়িয়ে ছাত্র ও কর্মচারীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে, যা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

শেয়ার করুন