জনপ্রিয় গীতিকার ও সাংবাদিক কে জি মোস্তফা (৮৪) আর নেই। রোববার রাত আটটার দিকে ঢাকায় নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেছেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সোমবার বাদ জোহর রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে কে জি মোস্তফার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর আজিমপুর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য ছিলেন কে জি মোস্তফা। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসান হাফিজ ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান।
কবি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রবীণ সদস্য কে জি মোস্তফার
মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকা (বিজেএফডি)। সংগঠনের পক্ষে সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেন, একজন খ্যাতিমান গীতিকার, কবি ও সাংবাদিকের মৃতুতে জাতি সংস্কৃতিমনা, প্রগতিশীল ও মেধাবী মানুষকে হারালো।
শোকবার্তায় তাঁরা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কে জি মোস্তফা মূলত গীতিকার হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি একজন সফল সাংবাদিক ও কলামিস্টও ছিলেন। ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৮ সালে দৈনিক ইত্তেহাদে শিক্ষানবিশ হিসেবে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি হয় তাঁর।
ওই বছরেই দৈনিক মজলুমে সহসম্পাদক পদে নিয়োগ পান কে জি মোস্তফা। পত্রিকাটি বন্ধ হওয়ার আগপর্যন্ত সেটিতেই কাজ করেছেন তিনি। এরপর দীর্ঘ বিরতি শেষে ১৯৬৮ সালে সাপ্তাহিক জনতায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।
স্বাধীনতার পর কে জি মোস্তফা প্রথমে দৈনিক গণকণ্ঠ ও পরে দৈনিক স্বদেশে চিফ রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর দৈনিক জনপদে কূটনৈতিক প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন।
১৯৭৬ সালে কে জি মোস্তফা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরে সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন। পদোন্নতি পেয়ে প্রথমে সম্পাদক ও পরে সিনিয়র সম্পাদক পদে উন্নীত হন তিনি।
১৯৬০ সাল থেকে চলচ্চিত্র, রেডিও ও টেলিভিশনে কে জি মোস্তফার লেখা প্রচুর গান প্রচারিত হয়। তাঁর গানে উপমহাদেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী তালাত মাহমুদসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান প্রায় সব শিল্পী কণ্ঠ দিয়েছেন।
কে জি মোস্তফার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘তোমারে লেগেছে এত যে ভালো, চাঁদ বুঝি তা জানে’ ও ‘আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন’। একসময় তিনি নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালনার দিকেও ঝুঁকেছিলেন। সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন ‘মায়ার সংসার’, ‘অধিকার’ ও ‘গলি থেকে রাজপথ’ ছবিতে।