টানা আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মধ্যে রয়েছে ইউক্রেন। আর তাই নিজেদের নিরাপত্তার খাতিরেই অবিলম্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ চায় কিয়েভ। এমনকি ইইউয়ের সদস্যপদের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও।
তবে জেলেনস্কি তথা ইউক্রেনের ইইউয়ের সদস্যপদের সেই আশায় আপাতত গুড়েবালি। কারণ ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য করতে কয়েক দশক সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। মঙ্গলবার (১০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সোমবার (৯ মে) ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গে ইইউর পার্লামেন্টে এক বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ একথা বলেন। সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকার পাশাপাশি ইউক্রেনকে তিনি একটি ‘সমান্তরাল ইউরোপীয় সম্প্রদায়ে’ যোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দাবি, এর ফলে ইইউয়ের সদস্য নয় এমন দেশগুলো অন্য উপায়ে ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামোয় যোগদানের অনুমতি পাবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইউক্রেনের যোগদান নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এমন এক সময়ে মন্তব্য করলেন যখন ডনবাস অঞ্চলে কিয়েভ ও মস্কোর সেনাদের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই চলছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই অঞ্চলে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে বহুগুণে।
স্ট্রাসবার্গের ইইউর পার্লামেন্টে বক্তৃতা করার সময় শনিবার প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমরা সকলেই ভালোভাবে জানি যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইউক্রেনের) যোগদানের অনুমতি দেওয়ার প্রক্রিয়াটি বাস্তবিকই বেশ কয়েক বছর, সম্ভবত কয়েক দশক পর্যন্ত সময় লাগবে। যতক্ষণ না আমরা ইইউতে যোগদানের মান বা শর্ত কমানোর এবং আমাদের ইউরোপের ঐক্য পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত না নিচ্ছি ততক্ষণ পর্যন্ত এটিই সত্য।’
ফরাসি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ইউক্রেনকে দ্রুত ইইউয়ের সদস্যপদ দিতে গিয়ে এটি (সদস্যপদ) অর্জনের মানদণ্ড স্থগিত করা উচিত নয়। এর পরিবর্তে একটি ‘সমান্তরাল ইউরোপীয় সম্প্রদায়ে’ যোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া উচিত।
এর আগে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর দিন দু’য়েকের মাথায় ইউক্রেনকে ‘অবিলম্বে’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
সেসময় তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য সব ইউরোপিয়ানদের সঙ্গে অবস্থান করা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সবার সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে থাকা। আমি নিশ্চিত আমাদের দাবি ন্যায্য এবং এটি সম্ভব।