ভোজ্যতেল মজুদদারদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক

সম্পাদকীয়

মোকতাদির চৌধুরী

রাশিয়া-ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধ শুরুর আগেই বিশ্বজুড়ে শ্রমিকের অভাব ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ নির্দিষ্ট কয়েকটি কারণে ভোজ্যতেলের আর্ন্তজাতিক বাজারে অস্থিরতা বিরাজমান ছিল। দেশের বাজারে এর ছাপ স্বাভাবিকভাবেই সময়ে-অসময়ে কোনো না কোনোভাবে পড়ে। বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে তা সামলে ওঠে সরকার। তবে সবশেষ সয়াবিন, বা ভোজ্যতেল নিয়ে দেশে যা ঘটছে, এর জন্য আর্ন্তজাতিক বাজার পরিস্থিতির চেয়ে বেশি দায়ী দেশের একশ্রেণির অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী। বেশি মুনাফার আশায় তারা ভোজ্যতেল কিনে মজুদ রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন।

গত ৫ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সয়াবিন তেলের লিটার প্রতি নতুন দাম নির্ধারণ করার পর ওই দোকানি, মজুদদাররা আগে থেকে লুকিয়ে রাখা তেল বাজারে আনতে শুরু করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মজুদকৃত সয়াবিন তেল উদ্ধার করছে। দোকানি ও ব্যবসায়ীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠাচ্ছে। আমরা বলবো, এ অভিযান আরো জোরালো হোক। একই সঙ্গে অবৈধভাবে মজুদকারকদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হোক। তাহলে ভবিষ্যতে কোনো নিত্যপণ্যের মজুদ করে ক্রেতাসাধারণের পকেট কাটার বিষয়ে সাবধান থাকবেন তারা। কয়েকদিনের কারাবাসে এসব মুনাফাখোরের উচিত শিক্ষা হবে না।

সর্বোচ্চ সাজার আওতায় আনতে না পারলে তারা আবারও কোনো সুযোগমতো বেশি মুনাফার জন্য খাদ্য বা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুদ করার আশঙ্কা রয়ে যায়। ভোক্তাদেরকে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেওয়া ও মজুদদারদের কারসাজির ফলে সরকারের বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়া এড়াতে মুনাফালোভীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে বহুলালোচিত বিশেষ ক্ষমতা আইন, বা দ্রুত বিচার আইনে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। প্রচলিত আইনে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে প্রয়োজনে জাতীয় সংসদে নতুন আইন প্রণয়ন করা হোক। বাড়তি দাম পাওয়ার আশায় ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন, তাদের একজনও যেন কোনোভাবে আইনানুগ ব্যবস্থার বাইরে না থাকেন।

শেয়ার করুন