শান্তি প্রতিষ্ঠায় বুদ্ধের জীবনাদর্শ ভূমিকা রাখতে পারে: রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ফাইল ছবি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, ধর্ম-বর্ণ-জাতিতে হানাহানি রোধসহ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আগামীকাল ১৫ মে বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে আজ শনিবার এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীকে মৈত্রীময় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বাণীতে বলেন, শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব। গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণ বুদ্ধ পূর্ণিমার সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। বুদ্ধ ছিলেন জীবের মঙ্গল কামনায় সত্যসন্ধ। পৃথিবীকে সুখি ও শান্তিপূর্ণ করে গড়ে তোলার জন্য তিনি নিরন্তর প্রয়াস চালান।

universel cardiac hospital

তিনি বলেন, বুদ্ধের চেতনায় ছিল দুঃখ জয়ের মাধ্যমে জীবের মুক্তি কামনা। তিনি মানব জীবনে দুঃখ ও দুঃখের কারণ এবং তা নিবারণের উপায় সম্বন্ধে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেন, যা ‘চতুরার্য সত্য’ নামে পরিচিত। চতুরার্য সত্য তত্ত্বে তিনি জীবনে দুঃখ, দুঃখের উৎপত্তি, দুঃখ ভোগের কারণ এবং তা থেকে মুক্তির পথ দেখান।

তিনি বলেন, বুদ্ধের মতে নির্বাণ লাভের মাধ্যমে মানুষ জীবনের পরমার্থ অর্জন এবং সব ধরনের দুঃখ থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারেন। এ জন্য তিনি অষ্টমার্গ তথা প্রজ্ঞা, শীল ও সমাধি চর্চার উপদেশ দেন। তিনি স্থান-কাল-পাত্রের ঊর্ধ্বে উঠে পৃথিবীর সব জীবের কল্যাণ ও সুখ কামনা করেন। ‘সব্বে সত্তা সুখীতা হোন্তু’ পৃথিবীর সব প্রাণি সুখী হোক, এ ছিল বুদ্ধের শাশ্বত দর্শন।

তিনি বলেন, বুদ্ধ একটি সৌহার্দ ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় আজীবন সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করে গেছেন। ‘অহিংসা পরম ধর্ম’- বুদ্ধের এই অমিয় বাণী আজও সমাজে শান্তির জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। আজকের এই অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, ধর্ম-বর্ণ-জাতিতে হানাহানি রোধসহ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বুদ্ধের দর্শন ও জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

আবদুল হামিদ বলেন, প্রাচীনকাল থেকে বাংলার জনপদের সাথে বৌদ্ধ সভ্যতা ও কৃষ্টি গভীরভাবে মিশে আছে। পাহাড়পুর ও ময়নামতি শালবন বিহার তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল থেকে এ দেশের সব ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠান অত্যন্ত জাঁকজমকভাবে পালন করে আসছে। এটা এ দেশের সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের চর্চা ও বুদ্ধের মহান আদর্শকে ধারণ করে বৌদ্ধ সম্প্রদায় দেশের উন্নয়নে তাদের কর্মপ্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।

রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বুদ্ধপূর্ণিমা উৎসব উদযাপন করবেন। বুদ্ধপূর্ণিমা সবার জন্য বয়ে আনুক অনাবিল শান্তি ও সমৃদ্ধি।

শেয়ার করুন