স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলেছেন তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রেখেছেন। শত প্রতিকূলতার মাঝে জীবনের মায়া ত্যাগ করে সেদিন তিনি দেশে ফিরেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ এগিয়ে চলেছে।
আজ রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: ইতিহাসের পুর্ননির্মাণ’ শিরোনামে আয়োজিত আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ১৭ মে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস সামনে রেখে প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
এতে বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্য মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম, সংগঠনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহ আজম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম সাজু, কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মিল্টন বিশ্বাস প্রমুখ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করেন, শেখ হাসিনার বিকল্প শুধু শেখ হাসিনা। তাঁকে বারবার দরকার। তিনি দেশকে ভালোবাসেন, দেশের জনগণকে ভালবাসেন। তিনি একজন দূরদর্শী নেতা।
বঙ্গবন্ধুর দুইকন্যা জীবিত বলেই বাংলাদেশকে এই পর্যায়ে দেখতে পাচ্ছি বলে মন্তব্য করেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, তাঁর (শেখ হাসিনা) কঠোর পরিশ্রম ও দূরদর্শিতার কারো সঙ্গে তুলনা হয় না। আমরা যখন বিদেশে যেতাম সেখানে সবাই একটা কথাই বলতেন, তোমরা সেই জাতি, যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। সেই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিয়েছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা।
স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী বলেন, যেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশে ফিরেন; সেদিন লাখো মানুষের ঢল নেমেছিলো। সেদিন ঝড় বৃষ্টি হচ্ছিলো, মনে হলো যেন প্রকৃতিও হয়ত বঙ্গবন্ধু কন্যাকে স্বাগত জানাতে এসেছে। এসেই রাজধানীর ধানমন্ডি-৩২ এ গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। গেটে দাঁড়িয়েই মোনাজাত করেন। সেদিনই তিনি ঠিক করে নিয়েছিলেন, কীভাবে দেশের অবস্থার পরিবর্তন করবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা বলেছিলেন; আমি যদি ক্ষমতায় আসি, তাহলে বাংলাদেশকে বদলে দেবো এবং তিনি এসেছিলেনও। এরপরেই ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়। বঙ্গবন্ধু যে অসমাপ্ত কাজগুলো রেখে গিয়েছিলেন, সব কাজ তিনি বাস্তবায়ন করছেন। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশকে আজকে পরিপূর্ণ ঝুড়িতে পরিণত করেছেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন জরুরি ছিল। তিনি দেশে ফিরেই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে, একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুদ্ধ করেন। তিনি ভারতের সাথে পানি বণ্টন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি, মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমার মতো যে কাজ করেছেন, সেগুলো তাঁর জন্যই সম্ভব হয়েছে।
অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পরে উগ্র ধর্মবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উস্কে দিয়ে তাদের রাজনীতি করার অধিকার দিয়ে রাষ্ট্রটিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে যোজন যোজন দূরে নিয়ে গেলেন সামরিক শাসকরা। সেখানে থেকে শেখ হাসিনা দেশকে পুননির্মাণ করলেন। মৌলবাদী রাষ্ট্র হওয়ার পথ থেকে বাংলাদেশকে বাঁচালেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মীজানুর রহমান বলেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে এই দেশকে মিনি পাকিস্তান বানানোর অপচেষ্টা হয়েছিলো। ইতিহাসের জঘন্যতম ওই হত্যাকাণ্ডের পর আমরা স্বাধীন বাংলাদেশকে হারিয়ে ফেলেছিলাম। শেখ হাসিনা দেশে ফেরার কারণে আমরা বাংলাদেশকে ফিরে পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের ধারায় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।