সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা বৃষ্টির কারণে দেশের চার নদীর চার পয়েন্টের পানি সোমবার (১৬ মে) বিপৎসীমার ওপরে উঠেছে। গতকাল তিন নদীর ৩ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে ছিল। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নদীগুলোর পানি কয়েকটি স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে সিলেট জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। আগামী বুধবারের (১৮ মে) পর বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতির আশা করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, গঙ্গা নদীর পানি স্থিতিশীল। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চলের ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

universel cardiac hospital

বন্যা পূর্বাভাস এবং সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভুইয়া বলেন, আগামী দুদিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকবে। এরপর পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হতে পারে বলে আমরা আশা করছি।

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর গাণিতিক মডেলভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের কয়েকটি স্থানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদনদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ধান নদীগুলো -সুরমা, কুশিয়ারা, ভোগাই-কংস, ধনু-বাউলাই, মনু, খোয়াই নদীর পানি কয়েকটি পয়েন্টে সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার নদীগুলোর পানি কয়েকটি স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে সিলেট জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

কেন্দ্র জানায়, সারিগোয়াইন নদীর সারিঘা পয়েন্টের পানি গতকাল ছিল বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে। এখন তা আরও বেড়ে ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এদিকে কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ পয়েন্টের পানি ৯৬ সেন্টিমিটার থেকে বেড়ে এখন ১১০ সেন্টিমিটার, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টের পানি ১২২ থেকে বেড়ে ১২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে৷ এছাড়া আজ নতুন করে কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠেছে, এই পয়েন্টে এখন ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে পানি।

বৃষ্টিপাতের বিষয়ে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সিলেটের জাফলংয়ে ২২৬ মিলিমিটার। এছাড়া সিলেটের লালাখালে ৮৫, কানাইঘাটে ৭৫, সুনামগঞ্জে ৪৭, সুনামগঞ্জের ছাতকে ১০৫, লরেরগড়ে ৯০, মহেশখোলাতে ৬১, কুড়িগ্রামে ৫৯ এবং নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে ৪৮ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৪২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া আসামের গোয়ালপাড়ায় ৪৫, তেজপুরে ৮৩, দিব্রগড়ে ৪২, অরুণাচলের পাসিঘাটে ৪১ এবং পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে ৩১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

শেয়ার করুন