বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের জন্য একে অপরকে দুষছে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

খাদ্যাভাবে মানুষের মৃত্যু
ফাইল ছবি

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বজুড়ে খাদ্য পরিস্থিতির অবনতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া একে অপরকে দায়ী করছে। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দেশ দুটির তরফে এমন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। সংকট মোকাবিলায় কৃষ্ণ সাগর বন্দরে আটকে থাকা ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

যুক্তরাষ্ট্রের আয়োজিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন ‘কৃষ্ণ সাগরের বন্দরগুলো অবরুদ্ধ করা বন্ধ করুন। ইউক্রেনের বাইরে খাদ্য বহনকারী জাহাজ, ট্রেন ও ট্রাকগুলোর অবাধ প্রবাহের অনুমতি দিন।’

universel cardiac hospital

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের সমালোচনাকারী দেশগুলোতে খাদ্য ও সার রপ্তানি বন্ধ রাখার হুমকি দেওয়া বন্ধ করারও হুঁশিয়ারি দেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, লাখ লাখ ইউক্রেনীয় এবং বিশ্বজুড়ে আরও বহু মানুষের জন্য খাদ্য সরবরাহ আক্ষরিক অর্থেই রুশ সামরিক বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে আছে।

এদিকে, জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া যুক্তরাষ্ট্রের এ অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়ে বলেছেন যে বিশ্বের সব দুর্দশার জন্য তার দেশকে দায়ী করা হচ্ছে।

খাদ্য সংকটের জন্য পশ্চিমাদের দায়ী করে তিনি বলেন, বিমার ক্রমবর্ধমান ব্যয় এবং পশ্চিমা বাজারের জল্পনা-কল্পনা থেকে উদ্ভূত মূল্যস্ফীতিজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে খাদ্য সংকটে ভুগছে বিশ্ব।

কৃষ্ণ সাগরের উপকূলে মাইন স্থাপন করে ইউক্রেন নিজেরাই বন্দর অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলেও পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি। ইউক্রেন বন্দরে অবরুদ্ধ কয়েক ডজন বিদেশি মালবাহী জাহাজকে মুক্ত করতে শিপিং সংস্থাগুলোকেও সহযোগিতা করতে চায় না ইউক্রেন এমন অভিযোগও করেন এই কর্মকর্তা।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতাকে আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে গেছে এটি।

পাল্টা জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেন এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়াকে খাদ্য ও সার রপ্তানি করতে বাধা দিচ্ছে না।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সম্প্রতি বৈশ্বিক খাদ্য ঘাটতির বিষয়ে সতর্ক করেন। ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার জন্য রাশিয়াকে আহ্বান জানান তিনি । তার এ আহ্বান জানানোর একদিন পরই এ প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলো দেশ দুটির।

বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের কারণে খাদ্যের দাম গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। উন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাবের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব দুর্ভিক্ষ ও ঋণ সংকটের হুমকির মধ্যে পড়েছে। রাশিয়ার আগ্রাসন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতাকে আরও গভীর করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউক্রেন এবং রাশিয়া বিশ্বব্যাপী খাদ্যের ১০ ভাগের এক ভাগ সরবরাহ করে। তারা বিশ্বের গম রপ্তানির ৩০ শতাংশের পাশাপাশি সূর্যমুখী তেলের ৬০ শতাংশ উৎপাদন করে। কমপক্ষে ২৬টি দেশ তাদের অর্ধেকেরও বেশি খাদ্যশস্যের জন্য রাশিয়া এবং ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল।

সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি

শেয়ার করুন