পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আগামী ২৫ মে ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চের ডাক দিয়েছেন। সেদিন বিকাল ৩টায় শ্রীনগর হাইওয়েতে তিনি তার কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে লংমার্চে অংশ নেবেন।
পিটিআইয়ের প্রধান কমিটির বৈঠক শেষে রোববার (২২ মে) পেশোয়ারে এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খান এই লংমার্চের ঘোষণা দেন। এসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন শাহ মাহমুদ কুরেশি ও মাহমুদ খানসহ দলের একাধিক নেতা।
পরে এক টুইট বার্তায় পাকিস্তানিদের লংমার্চে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান ইমরান খান। এসময় ইমরান খান আরও জানান যে পেশোয়ার থেকে লংমার্চের নেতৃত্ব দেবেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি শিগগির নির্বাচনের আবারও দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত কিন্তু এই চোরদের দেশ শাসন করা কখনই মেনে নেবো না।’ নতুন নির্বাচনের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া ও বিধানসভা ভেঙে দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, পিটিআই একটি শান্তিপূর্ণ দল এবং কখনও সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলাকে উসকে দেয়নি।
এটা রাজনীতি নয়, জিহাদ (পবিত্র যুদ্ধ) উল্লেখ করে ইমরান খান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যদি সরকার লংমার্চ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তাহলে সেটা হবে বেআইনি এবং আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে, ইমরান খান তার সরকারের সময়কার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয় তুলে ধরেন। বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশকে দেউলিয়াত্বের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আবারও পুনর্ব্যক্ত করেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ‘ষড়যন্ত্র’, সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের যোগসাজশে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে।
ইমরান খান বলেন, গত বছরের জুনে ‘ষড়যন্ত্র’ সম্পর্কে জানতে পারেন তিনি। প্রতিরোধ করার জন্য কঠোর চেষ্টা করেও দুর্ভাগ্যবশত, তার প্রচেষ্টা কোন ফল দেয়নি। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে নয়, এটি ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র।
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল মূলত ২০২৩ সালের আগস্টে। কিন্তু তার আগেই অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে। অতীতের ধারা অনুসরণ করে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের পতনও হয়েছে মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই।
পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো প্রধানমন্ত্রী অনাস্থা ভোটে হেরে বিদায় নিয়েছেন ক্ষমতা থেকে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার শুনানি হতে পারে। রাজনীতির লড়াইয়ে গ্রেফতারও হতে পারেন পাকিস্তানের এই সাবেক ক্যাপ্টেন।
সূত্র: জিও নিউজ