সারা দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধিক্কার ও নিন্দা জানাচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী কেন এ ধরনের বক্তব্য রেখেছেন? কারণ তিনি এখন নার্ভাস হয়ে গেছেন। তিনি দেখতে পাচ্ছেন, তার ক্ষমতার দিন শেষ। তিনি দেখতে পাচ্ছেন, সামনে আর ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। তার তকত-তাউস টলমল হয়ে গেছে।
সোমবার (২৩ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। ‘প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকির’ প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, এখনও সময় আছে পদত্যাগ করুন। নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি নিন্দা ও ধিক্কার জানাই প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের জন্য, যিনি খালেদা জিয়াকে টুস করে পদ্মা থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকির দিয়েছেন। আজকে সমস্ত দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে ধিক্কার ও নিন্দা জানাচ্ছে। কোনো সভ্য এবং গণতান্ত্রিক সমাজে এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করা যায় না।
তিনি বলেন, জনগণ জানতে চায়, পদ্মা সেতুর জন্য মানুষের কত টাকা কেটে নিয়েছেন। জাতির কতটাকা আপনারা এই পদ্মা সেতুতে ব্যয় করেছেন। আর কত টাকা নিজেদের পকেটে ভরেছেন।
প্রধানমন্ত্রী নিজেকে একটা দুর্গের মধ্যে বন্দি করে রেখেছেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনি তো স্বেচ্ছায় নিজেকে-নিজে বন্ধি করে রেখেছেন। আপনি তো জনগণকে ভয় পান। জনগণের সামনে আসেন না। জনগণের সামনে এলে তাদের ভাষা বোঝতে পারতেন। তারা কী বলতে চায় তা বোঝতে পারতেন।
আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে বলে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রত্যেক দিন অর্থনীতিবিদরা বলছেন- বাংলাদেশের অর্থনীতি রসাতলে যাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছেন। প্রত্যেক দিন খবরের কাগজ খুললে দেখা যায়, লুটপাট হচ্ছে। আর এর সঙ্গে জড়িত সরকারি দলের লোকেরা।
তিনি আরও বলেন, আপনি খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকি দেন। তিনি হচ্ছেন সেই নেত্রী, যিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। যিনি কোনোদিনও নির্বাচনে পরাজয় বরণ করেনি।
খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ বলে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তাকে এখন যদি উন্নত চিকিৎসা দেওয়া না হয়, তাহলে তার জীবন হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। আমরা বারবার বলেছি, তাকে মুক্তি দেন। তাই আজকে এখান থেকে দাঁড়িয়ে আহ্বান ও দাবি জানাতে চাই, এখনও সময় আছে তাকে মুক্তি দিন। বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিন। আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের যে মামলা আছে, তা তুলে নিন। যারা কারাগারে আছে তাদের মুক্তি দিন।
দেশের মানুষই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, খুব পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, দেশনেত্রীকে কটূক্তি করার জন্য ক্ষমা চান। অন্যথায় জনগণ আপনাদের ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেবে না। আপনাকে টেনে-হিঁছড়ে নামাবে ক্ষমতা থেকে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম মঞ্জু, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ।