বিশ্ব করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব থেকে এখনও সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়নি। এখনও অনেক দেশে করোনার সংক্রমণ রয়েছে। এর মধ্যেই মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে কাজ করছে মাঙ্কিপক্স। কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলতে শুরু করেছে বিরল এই রোগ। মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের প্রধান দুটি ধরন- পশ্চিম আফ্রিকান ও মধ্য আফ্রিকান। এটি ছড়িয়ে পড়ছে আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেও। তবে এশিয়ার কোনো দেশে এখনও আক্রান্তের খবর নেই। এটা নিঃসন্দেহে স্বস্তির খবর।
লন্ডনে ৭ মে প্রথম একজনের শরীরে মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস ধরা পড়ে। আক্রান্ত ওই ব্যক্তি নাইজেরিয়ায় গিয়েছিলেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি বিশেষ ধরনের পক্স। এই ভাইরাস এত বিরল, এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের সুস্থ করার কোনো চিকিৎসা মেলেনি। নেই কোনো সঠিক ওষুধ। এটি চিন্তার বিষয়। কোনো ধরনের ওষুধ নেই বলে বেশি সতর্ক থাকতে হবে, যাতে এ রোগ আমাদের দেশে প্রবেশ করতে না পারে। চিকিৎসকের মতে, ১০ কঠিন রোগের একটি হলো মাঙ্কিপক্স। এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এমনকি কোনো বাচ্চার শরীরে এই ভাইরাস বাসা বাঁধলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
আমাদের প্রাথমিক পর্যায়ে এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। আবার যাতে এ ভাইরাস নিয়ে মানুষের মনে প্যানিক সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে। যারা বিদেশে যাওয়া-আসা করেন, তাদের সচেতন হতে হবে, যাতে এ ধরনের রোগে তারা আক্রান্ত না হন। ইতোমধ্যে বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যেসব দেশে বেশি আকারে এই ভাইরাস দেখা দিয়েছে, সেসব দেশে আমাদের নাগরিকদের ভ্রমণ করতে নিষেধ করা জরুরি।
মাঙ্কিপক্সকে চিকেন পক্সের মতো হালকা করে দেখলে ভুল হবে। ভুল করার আগেই আমাদের এর বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্মল পক্সের টিকা বা অন্য কোনো টিকা এই ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করে কিনা এ বিষয়ে চিকিৎসা গবেষকদের পরীক্ষা করা উচিত। যদি কোনো টিকা কাজ করে তা আমাদের জন্য ভালো। মাঙ্কিপক্সের যেহেতু কোনো চিকিৎসা নেই, তাই সংক্রমণ প্রতিরোধের মাধ্যমে এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
মো. শফিকুল ইসলাম : সহযোগী অধ্যাপক, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ