নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি। মঙ্গলবার (২৪ মে) বিকেলে ক্যাম্পের বিভিন্ন ক্লাস্টার পরিদর্শন শেষে তিনি এ আশ্বাস দেন। এ সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দলও তার সঙ্গে ছিলেন।
এরপর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির নেতৃত্বে আসা সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল ভাসানচর ত্যাগ করেন।
ভাসানচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ইমদাদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার বিভিন্ন ক্লাস্টার ঘুরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলছেন ও রোহিঙ্গাদের খোঁজখবর নিয়েছেন। এরপর রোহিঙ্গাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন।
ভাসানচরের ক্যাম্প ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হাইকমিশনার নিজেই রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ভাসানচরকে ঘিরে সরকারের এমন পরিপাটি ব্যবস্থা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। উনার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা এসে কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয় নেয়। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের চাপ সামলাতে সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ত্রয়োদশ ধাপে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে পৌঁছেছে ২৯ হাজার ১১৬ জন রোহিঙ্গা।
এ ছাড়া গত বছর মে মাসে সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে নিয়ে রাখা হয়।
জানা গেছে, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।