ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালতের রায়ে প্রায় ৪৪ বছর পর নিজের পৈতৃক ভিটা ফিরে পেয়েছেন নির্মল রায় নামে এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার (২৪ মে) সকালে জেলা শহরের কান্দিপাড়া এলাকার ৫ শতাংশ জায়গার ওই বাড়িটি আদালতের নির্দেশে দখলদারদের কাছ থেকে প্রকৃত মালিক নির্মলের কাছে বুঝিয়ে দেয় জেলা প্রশাসন। তিনি কান্দিপাড়া এলাকার মৃত জগবন্ধু রায়ের ছেলে।
নির্মল রায় জানান, ১৯৭৮ সালে তার পৈতৃক ভিটাটি স্থানীয় হামদু মিয়া ও রুকুনুদ্দিন নামে দুই ব্যক্তি যোগসাজশ করে ভূমি অফিসের রেকর্ডে অর্পিত সম্পদ হিসেবে লিপিবদ্ধ করেন। পরে তারা ভূমি অফিস থেকে সরকারি জায়গা হিসেবে এই জায়গা লিজ নেন। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে শাহজাহান ভূইয়া নামে এক ব্যক্তিকে এই বাড়ি লিজ দেন। ২০১২ সালে সরকার অর্পিত সম্পদের যারা ওয়ারিশ আছেন, তারা পাবেন মর্মে একটি নির্দেশনা জারি করলে পৈতৃক ভিটা ফিরে পেতে আদালতে মামলা করি। ২০১৫ সালে আদালতের রায় আমার পক্ষে আসে। তবে আদালতের এই রায়ের বিপক্ষে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর ২০১৭ সালে আপিলের রায়ও আমার পক্ষে আসে।
তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালে আপিলের এই রায়ের বিরুদ্ধে লিজ নেওয়া শাহজাহান ভূইয়ার স্ত্রী পারুল বেগম হাইকোর্টে রিট করেন। সেই রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। একই বছর তারা আদালতে আবার রিভিউ আবেদন করলে সেটিও খারিজ হয়। তবে আদালতের রায়ের পরও তিন বছর বাড়ি বুঝে পাননি তিনি।
বিষয়টি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাতকে জানিয়ে বাড়ি ফিরে পেতে তার সহযোগিতা চান নির্মল ও তার স্ত্রী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জয়া রায়। পরবর্তীতে নির্মল ও জয়াকে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলমের কাছে নিয়ে গিয়ে বিস্তারিত খুলে বলেন নিশাত। এরপর জেলা প্রশাসক আদালতের রায়ের কপি দেখে দ্রুত আদালতের রায় বাস্তবায়ন করার জন্য সদর উপজেলার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশনা দেন।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত বলেন, আমি শুধু একটি অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। অবৈধভাবে এই পরিবারটিকে বের করে দিয়ে ঘরবাড়ি দখলে নিয়েছিল একটি চক্র। জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় আদালতের রায়ের বাস্তবায়ন হয়েছে।
সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাঈফ উল আরেফিন জানান, আদালতের রায় অনুযায়ী নির্মল রায়কে তার বাড়ি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।