২৩ রানে বাংলাদেশ হারিয়ে বসেছিল ৪ উইকেট। আশার প্রদীপ হয়ে ছিল মুশফিকুর রহিম আর লিটন দাসের জুটিটি। প্রথম ইনিংসে দুজনই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। তবে এবার মুশফিক ইনিংসটা খুব বড় করতে পারলেন না।
পঞ্চম দিনের সকালে আধ ঘণ্টা পেরোতেই উইকেট হারালেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। দিনের অষ্টম ওভারে কাসুন রাজিথার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন মুশফিক। মাত্র ৫৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ইনিংস হারের শঙ্কা ভালোভাবেই জেঁকে বসেছিল টাইগার শিবিরে।
কঠিন সেই বিপদ থেকে দলকে উদ্ধার করলেন সাকিব আল হাসান আর লিটন দাস। ষষ্ঠ উইকেটে তাদের দারুণ এক জুটিতে ইনিংস পরাজয় এড়িয়ে লিড নিয়েছে বাংলাদেশ। হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন সাকিব, লিটনও ফিফটির দ্বারপ্রান্তে।
মিরপুর টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেটে ১৪৯ রান নিয়ে পঞ্চম দিনের লাঞ্চ বিরতিতে গেছে টাইগাররা। স্বাগতিকদের লিড এখন ৮ রানের। সাকিব ৫২ আর লিটন ৪৮ রানে অপরাজিত আছেন।
টপঅর্ডারের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় চতুর্থ দিন বিকেলে মাত্র ২৩ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। শেষ দিকে লিটন ও মুশফিক মিলে ৩.৫ ওভার কাটিয়ে দেন নির্বিঘ্নে। বাংলাদেশ ৩৪ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দিনের খেলা শেষ করে। প্রথম ইনিংসের মতো আবারও লিটন-মুশফিকের কাঁধে বর্তায় বড় দায়িত্ব।
প্রথম ইনিংসের আত্মবিশ্বাস থেকে আজকের দিনের শুরুতেও ইতিবাচক খেলতে থাকেন মুশফিক। শুরুতে বেশ আক্রমণাত্মক ফিল্ড সাজায় শ্রীলঙ্কা। কিন্তু লিটন-মুশফিকের সাবলীল ব্যাটিংয়ের কারণে খানিক রক্ষণাত্মক হয়ে যায় তারা। আসিথা ফার্নান্দোর ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান মুশফিক।
আসিথার তুলনায় কাসুন রাজিথার বোলিং ছিল অধিক নিয়ন্ত্রিত। অফস্ট্যাম্পের বাইরে থেকে হালকা মুভমেন্টের বেশ কিছু ডেলিভারিতে লিটনের মনে প্রশ্নের সৃষ্টি করেন তিনি। ইনিংসে ১৯তম ওভারে তো রাজিথার বলে লিটনকে কট বিহাইন্ডই দিয়ে বসেছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচান লিটন।
রাজিথার পরের ওভারে মুশফিক পারেননি নিজেকে বাঁচাতে। অফস্ট্যাম্পের বাইরে লেন্থ ডেলিভারিটি হালকা স্কিড করে সোজা ঢুকে যায় স্ট্যাম্পে। দ্রুত ব্যাট নামিয়েও বোল্ড হওয়া থেকে বাঁচতে পারেননি মুশফিক। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪ চারের মারে ২৩ রান।
মুশফিক ফিরে যাওয়ার খোলসে ঢোকার বদলে আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। চাপ দূর করার জন্য লঙ্কানদের দুই মূল বোলার রাজিথা ও আসিথার বিপক্ষে পাল্টা আক্রমণ করেন সাকিব-লিটন। তাই বলে বাড়তি ঝুঁকি নেননি তারা। অফস্ট্যাম্পের বাইরে হাত খোলার মতো ডেলিভারিগুলোকে সীমানাছাড়া করেছেন এ দুজন।
রাজিথার করা ২৫তম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান সাকিব। তিনটিই ছিল অফস্ট্যাম্পের বাইরে ফুল লেন্থের ডেলিভারি। হাত খুলে কভার দিয়ে চালিয়ে দেন সাকিব। সেই ওভার পর রাজিথাকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে নেন লঙ্কান অধিনায়ক।
বাঁহাতি স্পিনার প্রবীণ জয়াবিক্রম নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে খানিক ভয়ের কারণ হয়েছেন। তবে লিটনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের কারণে সফলতার দেখা পাননি এ তরুণ স্পিনার। আসিথার ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৩০ ওভারের ভেতরেই দলীয় শতরান পূরণ করে নেন সাকিব-লিটন।