‘গোপন কক্ষের ডাকাত-সন্ত্রাসীরাই ইভিএমের বড় চ্যালেঞ্জ’

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান

ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে ‘সন্ত্রাসী ও ডাকাতদের’ উপস্থিতিকেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করছেন নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান। এ ধরনের সন্ত্রাসী-ডাকাতদের অপতৎপরতা ছাড়া ইভিএমে সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানে আর কোনো চাপ নেই বলে জানান তিনি।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এদিন প্রথমবারের মতো কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে (কুসিক) বিভিন্ন প্রার্থী ও তাদের প্রতিনিধিদের ইভিএম কাস্টমাইজেশন দেখানো হয়।

universel cardiac hospital

নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব বলেন, ইভিএমে চ্যালেঞ্জ একটাই, প্রতিটি কেন্দ্রে গোপন কক্ষে একজন করে ডাকাত ও সন্ত্রাসী দাঁড়িয়ে থাকেন আর ভোটাররা এলেই বলেন- ‘আপনার ভোট হয়ে গেছে, চলে যান’। দিস ইজ দ্যা চ্যালেঞ্জ। ইভিএমে এর বাইরে আর কোনো চ্যালেঞ্জ আমি দেখি না।

তবে আগামী দিনে কোনো নির্বাচনে এরকম কিছু হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকবে, সাংবাদিকদের অ্যালাউ করা হবে। কোথাও এরকম কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমাদের কোনো দুর্বলতা নেই। কোনো চাপ নেই। আমরা টোটালি স্বাধীন। স্বাধীনভাবে কাজ করবো, দেখবেন। আমি কথা কম বলতে চাই।

কুসিক নির্বাচনে বিভিন্ন প্রার্থীর প্রতিনিধিদের কাস্টমাইজেশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আহসান হাবীব বলেন, তাদের অনেক প্রশ্ন ছিল। সেসব প্রশ্নের জবাব দিয়েছি। ভবিষ্যতে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে এ কাস্টমাইজেশন প্রক্রিয়া দেখানোর আহ্বান জানানো হবে।

কোনো ভোটারের আঙুলের ছাপ না মিললে বা আঙুল কেটে গেলে তা সমাধানে প্রিজাইডিং অফিসারের হাতে ১ শতাংশ ক্ষমতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে ভিডিও কল দিয়ে দেখা হবে এরকম কতজন রয়েছে। যার ভোট সে দেবে, যাকে খুশি তাকে দেবে। সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানে আমাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব থাকবে না।

২০১০ সালের ১৭ জুন অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে নগরীর জামালখান এলাকার একটি ওয়ার্ডের ১৪টি ভোটকেন্দ্রে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইভিএম মেশিন ব্যবহার করে ভোটগ্রহণ হয়। সেবার নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, ইভিএমে ভোটে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ইভিএম নিয়ে বেশ আগ্রহী হলেও রাজনীতিতে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো শুরু থেকেই এ যন্ত্রের বিরোধিতা করে আসছিল। বিএনপির অভিযোগ, এ যন্ত্র দিয়ে দূর থেকে ভোট নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

সম্প্রতি জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবল হক চুন্নু বলেছেন, ইভিএম ভালো, কিন্ত যারা পরিচালনা করবেন তারা তো নিরপেক্ষ নন। ইভিএমে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী কুসিক নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১৭ মে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ২৬ মে এবং প্রতীক বরাদ্দ হয় ২৭ মে। আগামী ১৫ জুন এ সিটির ১০৫টি কেন্দ্রের সবকটিতে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হবে।

শেয়ার করুন