ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গড়িয়েছে চতুর্থ মাসে। এবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করে বলেছেন, তার দেশের ২০ শতাংশ ভূমি দখলে নিয়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার (২ জুন) সকালে লুক্সেমবার্গের পার্লামেন্টের ভাষণে এ অভিযোগ করেন।
জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার দখলকৃত ভূমির পরিমাণ এক হাজার কিলোমিটারের বেশি বা ৬২১ মাইলের মতো। এর মধ্যে আছে- ক্রিমিয়া ও পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অংশ, যেগুলো রাশিয়াপন্থি বাহিনী ২০১৪ সালে দখল করেছিল।
রুশ বাহিনী পূর্ব ডনবাস অঞ্চলের সেভেরোডোনেটস্ক শহরে হামলা জোরদার করেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া শহরের বেশিরভাগ এলাকা দখল করে নিয়েছে।
সেভেরোদোনেটস্ক হলো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন পূর্বাঞ্চলীয় শহর এবং আঞ্চলিক গভর্নর সের্হি হাইদাই বলেছেন যে রাশিয়া সব দিক থেকে শহরের প্রতিরক্ষা প্রাচীর ভেদ করার চেষ্টা করছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ডনবাসের পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়নি তবে ইউক্রেনীয়রা সেভেরোডোনেটস্কের যুদ্ধে ‘কিছু সাফল্য’ পেয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার বেসামরিক লোক শহরে আটকা পড়ে আছে। তাদের মধ্যে অনেকেই অ্যাজোট রাসায়নিক প্ল্যান্টে আশ্রয় নিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়ার অভিযানে ইউক্রেনে শুধু অবকাঠামোগত ক্ষতিই হয়নি, হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে নিজ বাড়িঘর ছেড়েছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে পাঁচ কোটির বেশি দেশের বাইরে চলে গেছে। যাদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু।
এখনো যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ নেই বরং ক্রমশ উত্তেজনা বাড়ছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। দেশ দুটির টানা তিন মাসের লড়াইয়ে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। আধুনিক অস্ত্রের ঝনঝনানিতে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ গুরুত্বপূর্ণ সব অঞ্চল। জীবন বাঁচাতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ইউক্রেনের বহু নাগরিক।
রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পর থেকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে পশ্চিমা দেশগুলো। দেশটির অর্থনীততে ধস নামানোর হুঁশিয়ারি দিচ্ছে তারা। তবে থামতে নারাজ রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
সূত্র: বিবিসি