পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য অর্থ, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়ও আকস্মিক বন্যার জন্য আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থার উন্নয়নে ইউএনডিপির সহায়তা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
শুক্রবার (৩ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য বলা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে অনুষ্ঠিত স্টকহোম+ ৫০ আন্তর্জাতিক বৈঠকে বিবৃতি প্রদানকালে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বৈঠকের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তৃতাকালে ড. মোমেন ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’র বিষয়ে জানান। এছাড়াও জাতীয় সংসদে ‘প্ল্যানেটারি ইমার্জেন্সি’ রেজুলেশন গ্রহণ করাসহ বাংলাদেশ সরকারের জলবায়ু পদক্ষেপ এবং উদ্যোগের উপর জোর দেন।
জাতিসংঘের আহ্বানে এবং কেনিয়া সরকারের সহায়তায় সুইডেন স্টকহোম+৫০ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে। ১৯৭২ সালে অনুষ্ঠিত মানব পরিবেশ সংক্রান্ত জাতিসংঘের সম্মেলনকে স্মরণ করে এবং বিশ্বব্যাপী পরিবেশ কর্মের ৫০ বছর উদযাপন করতে ‘স্টকহোম+৫০: আমাদের দায়িত্ব, আমাদের সুযোগ, সবার সমৃদ্ধির জন্য একটি স্বাস্থ্যসম্মত গ্রহ’ থিমের অধীনে এই উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জাতিসংঘের প্রায় ১৫০টি সদস্য রাষ্ট্র, জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থার সদস্য, আইজিও, আইএফআই এই আন্তর্জাতিক বৈঠকে অংশ নিচ্ছে।
স্টকহোম+৫০ এর সাইডলাইনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কীভাবে আরও ভালভাবে বুঝতে পারা, চিন্তা করা এবং কাজ করা যায় তা অন্বেষণের বিষয়ে একটি আন্তঃপ্রজন্মীয় গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেন। গোলটেবিল বৈঠকে তিনি তরুণ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ, জলবায়ু সহনশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলি তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ ‘ভবিষ্যত প্রজন্মের বিষয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের বিবৃতি’ অনুষ্ঠানেও যোগ দেয়। যার লক্ষ্য ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রতি বর্তমান প্রজন্মের দায়িত্বগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও অন্যান্য মানব ক্রিয়াকলাপের দ্বারা অপরিবর্তনীয়ভাবে গ্রহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না এমন নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া।
ড. মোমেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রশাসক এবং গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের (জিসিএফ) নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে ইউএনডিপি প্রশাসক অ্যাচিম স্টেইনার প্যারিস চুক্তির প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি এবং বৈশ্বিক জলবায়ু কর্মকাণ্ডে তার নেতৃত্বের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ড. মোমেন আকস্মিক বন্যার জন্য আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বন্যায় সুরক্ষার উদ্দেশ্যে বাঁধের উচ্চতা বাড়ানো, ম্যানগ্রোভ রোপণ করে কার্বন সিঙ্ক তৈরি করার জন্য ইউএনডিপির সহায়তা চান।