‘মেট্রোরেলের নিচের সড়কের উন্নয়নে ১২৭৬ কোটি টাকার প্রকল্প’

নিজস্ব প্রতিবেদক

মেয়র আতিকুল ইসলাম
মেয়র আতিকুল ইসলাম। ফাইল ছবি

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মেট্রোরেলের নিচের সড়কের সামগ্রিক উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে এক হাজার ২৭৬ কোটি টাকার চুক্তি করেছে। ইন্টিগ্রেটেড করিডর ম্যানেজমেন্ট (আইসিএম) নামের একটি প্রকল্পের আওতায় মিরপুর-১২ নম্বর থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত মেট্রোরেলের নিচের সড়কে এই কাজ করা হবে।

আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব তথ্য জানান মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। সম্প্রতি মেয়রস মাইগ্রেশন কাউন্সিল (এমএমসি) ও বিশ্বব্যাংকের নিমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

universel cardiac hospital

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আর কিছুদিনের মধ্যেই আমরা মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। মেট্রোরেল চালু হলে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। তাই মেট্রোরেলকে কেন্দ্র করে যে জীবনব্যবস্থা গড়ে উঠবে, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। স্টেশনকেন্দ্রিক যে অর্থনৈতিক বলয় গড়ে উঠবে, এর সঠিক পরিকল্পনা করে জনসাধারণের কাজে লাগাতে হবে।

মেয়র বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ইন্টিগ্রেটেড করিডর ম্যানেজমেন্ট (আইসিএম) প্রকল্পের আওতায় মিরপুর ১২ থেকে ফার্মগেট হয়ে বাংলামোটর পর্যন্ত এমআরটি-৬–এর নিচের সাড়ে ১০ কিলোমিটার সড়কে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করা হবে। এসব উন্নয়নের মধ্যে ৫০টি ইলেকট্রিক বাস নামানো, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা, বাস-বে, যাত্রীছাউনি, আধুনিক টিকিট বিক্রয়কেন্দ্র, মেট্রোরেলের সঙ্গে সংযোগ সড়কের উন্নয়ন, ট্রাফিক সংকেতের আধুনিকায়ন, কেন্দ্রীয় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা তৈরিতে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে।

সড়ক নিরাপত্তায় নগরবাসীকে রাস্তা ব্যবহারে সচেতন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পের জন্য ঢাকা উত্তর সিটিকে ১৫০ মিলিয়ন ডলার (১ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা) অর্থায়ন করছে। প্রকল্পের কাজ ২০২৩ সালের শেষের দিকে শুরু হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত।

ঢাকা উত্তর সিটিতে নগর ভবনে বিদ্যমান কমান্ড সেন্টারের (নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র) আধুনিকায়নের কাজ চলছে জানিয়ে মেয়র বলেন, আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। হাতে সময় আছে মাত্র ১৮ বছর। তাই দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শহরের নানাবিধ সুবিধা বাড়াতে হবে। নগরবাসীকে সার্বিক সুবিধার আওতায় আনতে না পারলে উন্নয়ন টেকসই হবে না।

মেয়র বলেন, এই লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে বিদ্যমান ‘কমান্ড সেন্টার’ (নিয়ন্ত্রণকক্ষ) আধুনিকায়ন করে জলাবদ্ধতার স্থান চিহ্নিতকরণ, বর্জ্যের গাড়ি, মশক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের গতিবিধির ওপর নজরদারি, রাজস্ব আদায়, খাল, ফুটপাত, পদচারী–সেতুর চলন্ত সিঁড়ি, সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস), সড়কবাতি সব একটি স্থান থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি প্রয়োজন অনুযায়ী ট্রাফিক পুলিশসহ সরকারি অন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উন্নয়নের মধ্যে ৫০টি ইলেকট্রিক বাস নামানো, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা, বাস-বে, যাত্রীছাউনি, আধুনিক টিকিট বিক্রয়কেন্দ্র, মেট্রোরেলের সঙ্গে সংযোগ সড়কের উন্নয়ন, ট্রাফিক সংকেতের আধুনিকায়ন, কেন্দ্রীয় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা তৈরিতে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে।

ঢাকা উত্তরের ৩৭টি বাণিজ্যকেন্দ্র (মার্কেট) থেকে বছরে মাত্র ১০ কোটি টাকা রাজস্ব আসে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘৩৭টি মার্কেটে প্রায় ৭০ বিঘা জায়গা। কিন্তু রাজস্ব আসে মাত্র ১০ কোটি টাকা। এটা আমাদের অপারগতা। তবে রাজস্ব আয় বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের কমার্শিয়াল ল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (সিএলডিপি) সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ওই শাখার প্রতিনিধিরা আগামী জুলাইয়ে উত্তর সিটিতে আসবেন। তখন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মীদের চুক্তি ব্যবস্থাপনা, আলোচনা, নীতিমালা প্রস্তুতের প্রশিক্ষণ, বাস্তবায়ন, সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলামসহ মেয়রের সঙ্গে সফরে যাওয়া চারজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন