সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে।

রোববার (৫ জুন) রাত পৌনে ৯টার দিকে কন্ট্রোল রুমের বরাত দিয়ে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, পার্কভিউ হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতালে আহত অবস্থায় ভর্তি আছেন মোট ১৮২ জন। এছাড়া চমেক হাসপাতাল ও পার্কভিউ হাসপাতাল থেকে ১২ জন রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর আহত ১০০ জনের বেশি চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানান তিনি।

এর আগে, সন্ধ্যায় আগুন ও বিস্ফোরণে দগ্ধ এবং আহতদের দেখতে চমেক হাসপাতালে যান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। সে সময় তিনি ৪৫ জনের মৃত্যু ও ১৬৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানান।

তবে রাতে এ বিষয়ে জানতে চাইলে এখন পর্যন্ত ৪৯ জন মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক।

তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারকে ৫০ হাজার ও আহতদের ২৫ হাজার করে অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারকে দুই লাখ করে টাকা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে, মৃতদের মধ্যে ১৭ জনের লাশ শনাক্তের তথ্য জানিয়েছেন পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মো. মনির হোসেন।

তিনি বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় লাশগুলোর পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে ১৭ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। যাদের আঙুলের ছাপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তাদের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে।

মৃতদের মধ্যে শনাক্ত হওয়া ১৭ জনের মধ্যে ১৫ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন, মোমিনুল হক, মহিউদ্দিন, হাবিবুর রহমান, রবিউল আলম, তোফায়েল ইসলাম, ফারুক জমাদ্দার, আফজাল হোসেন, মো. সুমন, মো. ইব্রাহিম, হারুন উর রশিদ, মো. নয়ন, শাহাদাত হোসেন, শাকিল তরফদার, শাহাদাত উল্লাহ জমাদার ও ফায়ার সার্ভিস কর্মী মনিরুজ্জামান।

এদিকে ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ পৃথক চারটি কমিটি গঠন করেছে। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আলমগীর জানান, কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে হতাহতদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

এর আগে, শনিবার (৪ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পুরো ডিপো এলাকা। পরে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ডিপোতে আমদানি-রফতানির বিভিন্ন মালামালবাহী কনটেইনার ছিল। ডিপোর কনটেইনারে রাসায়নিক ছিল, বিকট শব্দে সেগুলোতেও বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হতাহত হয়েছে বেশি। আহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতাল ও বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে আগুন নেভাতে যায় ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট। পরবর্তী সময়ে অন্য কনটেইনারের বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন তারা। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনা সদস্যরা যোগ দিয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের ২৯টির বেশি ইউনিট কাজ করছে।

শেয়ার করুন