সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ : ২৫ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ডে বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।

রোববার (৫ জুন) রাত ১১টায় বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

universel cardiac hospital

তিনি বলেন, রাত ১০টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখনও ডিপোর বিভিন্ন স্থান থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এছাড়া নিভু নিভু আগুন নেভাতে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

এর আগে, শনিবার (৪ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে সীতাকুণ্ডের ওই ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ১০টায় বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পুরো ডিপো এলাকা। ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ডিপোতে আমদানি-রফতানির বিভিন্ন মালামালবাহী কনটেইনার ছিল। ডিপোর কনটেইনারে রাসায়নিক ছিল, বিকট শব্দে সেগুলোতেও বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হতাহত হয়েছে বেশি। আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ২৯টির বেশি ইউনিট কাজ করেছে।

এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। রোববার (৫ জুন) রাতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ডিপোতে বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯। এরমধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ১২ কর্মী রয়েছেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমানও একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ১২ জন কর্মী আগুন নেভাতে গিয়ে মারা গেছেন। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত ৯ জনের মরদেহ শনাক্ত সম্ভব হয়েছে। এছাড়া আমাদের ১৫ কর্মী সিএমএইচে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার ফায়ার সার্ভিসের মৃত ১২ সদস্যদের তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের নিপন চাকমা, মিঠু দেওয়ান, এমরান হোসেন সুজন, রানা মিয়া, মনিরুজ্জামান, আলাউদ্দিন, শাকিল তরফদার, রমজানুল ইসলাম, সালাহ উদ্দীন কাদের চৌধুরী, মো. রবিউল ইসলাম, ফরিদুজ্জামান ও শফিউল আলমের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

দুর্ঘটনায় স্থাপিত কন্ট্রোল রুম থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, পার্কভিউ হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতালে আহত অবস্থায় ভর্তি আছেন মোট ১৮২ জন। এছাড়া চমেক হাসপাতাল ও পার্কভিউ হাসপাতাল থেকে ১২ জন রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর আহত ১০০ জনের বেশি চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে।

ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ পৃথক চারটি কমিটি গঠন করেছে। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আলমগীর জানান, কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে হতাহতদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন