মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার এ বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। আগামী অর্থবছরের বাজেটে বড় ব্যয়ের বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যেখানে বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের আয়ের খাতগুলো থেকে কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।
নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার আগামী অর্থবছরের প্রায় পৌনে ৭ লাখ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পেশ করা হবে। প্রত্যেকবারের মতো এবার সাধারণ জনগণকে প্রাধান্য দিয়ে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ জনগণের সরকার, তাই বাজেটেও সাধারণ জনগণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের সরকার দেশের তথা জনগণের সার্বিক উন্নয়নে নানাভাবে চেষ্টা করছে। কোভিড পরিস্থিতিতেও আমাদের অর্জন প্রশংসনীয়। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্ব কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। যার প্রভাব বাংলাদেশেও চলমান। এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের সরকার প্রধানের বিচক্ষণতায় অন্যান্য দেশের থেকে এখনও আমরা ভালো অবস্থানে আছি। বৈশ্বিক এই চ্যালেঞ্জ নিয়েও এবারের বাজেটে দেশের তথা জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের রূপরেখা থাকবে।
তিনি বলেন, বাজেটের একটি বিরাট অংশ দেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ব্যয় করা হবে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ এবার উন্নয়ন বাজেটের জন্য বরাদ্দ থাকছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। বৈদেশিক অর্থায়ন ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়েই ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। এবারের উন্নয়ন বাজেটে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার, কোভিড-১৯ মোকাবিলা, অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, দারিদ্র্য বিমোচন তথা দেশের সামগ্রিক আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।