জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রজনন মৌসুমের কারণে সুন্দরবন প্রবেশে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল সাতক্ষীরা উপকূলের ২৩ হাজার জেলে পরিবার। গত ১ জুন থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলেও এখন পর্যন্ত জেলে পরিবারগুলোর কাছে পৌঁছায়নি সরকারি কোনো সহায়তা।
ফলে পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে দুর্দিন। এসব পরিবারের সদস্যরা সাধারণত সুন্দরবন, সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদী ও তৎসংলগ্ন সাগরে মাছ, কাঁকড়া ও বনজ সম্পদ আহরণ এবং পর্যটদের গাইড হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
মৎস্য অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, শ্যামনগর উপজেলায় নিবন্ধিত ২৩ হাজার জেলে-বাওয়ালী রয়েছেন। এদের মধ্যে সমুদ্রে মৎস্য আহরণকারী ৭৯৫টি পরিবার চলতি মাসে সরকারি সহায়তা হিসেবে ৫৬ কেজি করে চাল পাবেন। আগামী জুলাই মাসে আরও ৮৩২৪টি পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।
শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী এলাকার কাঁকড়া আহরণকারী জেলে হানিফ গাজী বলেন, আমি সারাজীবন সুন্দরবনে মাছ, কাঁকড়া ধরে সংসার চালিয়ে আসছি। এখন তিন মাস পাস বন্ধ থাকায় আমার পরিবারের ওপরে আর্থিক প্রভাব পড়েছে। আশা করেছিলাম সরকারি সহায়তা পেলে কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে। তবে এখনো পর্যন্ত সরকারি সহায়তা না পাওয়া এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
দাতিনাখালী গ্রামের সিদ্দিক গাজী বলেন, বাপ-দাদা থেকে শুরু করে আমরা সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। সুন্দরবনের নদীগুলো থেকে মাছ-কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। তিন মাস কোনো রোজগার হবে না। আমাদের গচ্ছিত কোনো টাকাও নেই। পাস-পারমিট বন্ধ করে দেওয়ায় এখন খুব কষ্টে আছি। সরকারি সুযোগ-সুবিধাও পাচ্ছি না।
শ্যামনগর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা তুষার কুমার মজুমদার বলেন, শ্যামনগর উপজেলায় নিবন্ধিত জেলে-বাওয়ালীদের নামের তালিকা রয়েছে ২৩ হাজার। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৭৯৫ জন জেলে ৫৬ কেজি করে চাল পাবে। তাছাড়া ৮৩২৪ জন জেলের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।