চ্যালেঞ্জ থাকলেও আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে যুগোপযোগী বলে আখ্যা দিয়েছে দেশের সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদদের সংস্থা দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)।
আজ শনিবার ঢাকার কারওয়ান বাজারের নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ওপর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের ভাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে আইসিএবি আরও বলেছে, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে এ বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব বলে আমরা মনে করি।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন আইসিএবি সভাপতি শাহাদাত হোসেন, কাউন্সিল সদস্য সাব্বির আহমেদ, স্নেহাশীষ মাহমুদ অ্যান্ড কোম্পানির অংশীদার স্নেহাশীষ বড়ুয়া প্রমুখ। সংস্থার সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিএবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শুভাশীষ বোস।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন আইসিএবির সহসভাপতি এন কে এ মবিন, আরও দুই কাউন্সিল সদস্য আবদুল কাদের জোয়ারদার ও এম বি এম লুৎফুল হাদি এবং প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) মাহবুব আহমেদ সিদ্দিক।
সংবাদ সম্মেলনে আইসিএবির সিইও দুই মিনিট স্বাগত বক্তব্য দেওয়ার পর দেড় পৃষ্ঠার একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংস্থার সভাপতি শাহাদাত হোসেন। এরপরই হুমায়ুন কবির প্রশ্নোত্তর পর্বে চলে যান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা আইসিএবির নয়জনের মধ্যে কথা বলেছেন পাঁচজন।
আইসিএবি সভাপতি শাহাদাত হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, অতিমারি পরিস্থিতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অন্যান্য বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও সরকার ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। আমাদের মতো দেশের এগিয়ে যাওয়ার জন্য তা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। অবকাঠামো খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দও একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ।
আইসিএবি এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যৌথ প্রয়াসে ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেম (ডিভিএস) নামে একটি সফটওয়্যারের উদ্বোধন করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা আনা ও করপোরেট কর আদায় বাড়ানোই হচ্ছে এ সফটওয়্যার চালুর উদ্দেশ্য।
আইসিএবি সভাপতি বলেন, এ উদ্যোগ সরকারের লক্ষ্যকৃত রাজস্ব অর্জনে সহায়তা করবে। আইসিএবি আনন্দিত যে ডিভিএস বাস্তবায়নের ভূমিকা গুরুত্বের সঙ্গে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ ছাড়া করের হার শর্ত সাপেক্ষে কমানো, রপ্তানিমুখী অন্য শিল্পের জন্য ১২ ও পরিবেশবান্ধব শিল্পের জন্য ১০ শতাংশ কর আরোপ রপ্তানি বৈচিত্র্য উৎসাহিত করবে।
রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য আয়কর আইন, মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন প্রয়োগে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে অনুমোদিত প্রতিনিধি ও মূসক পরামর্শক হিসেবে অনুশীলনকারী পেশাজীবীদের প্রতিনিধি রাখার পরামর্শও দেন আইসিএবি সভাপতি।
প্রশ্নোত্তর পর্বে আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, বাজেট প্রণয়নে যেসব তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করা হয়েছে, তার অধিকাংশই গত জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। অথচ এরপর জ্বালানি তেলসহ অনেক কিছুর দাম বেড়ে গেছে, তার প্রতিফলন থাকা উচিত ছিল।
:পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ অনৈতিক মন্তব্য করে আইসিএবি কাউন্সিল সদস্য সাব্বির আহমেদ বলেন, বিদেশে সম্পদ থাকলে এত দিন আয়কর রিটার্নে দেখানোর সুযোগ ছিল না। এখন তা দেখানোর সুযোগ তৈরি হবে। সে বিবেচনায় পদক্ষেপটি ইতিবাচক।