‘জুলাই থেকে প্রতিদিন কিছু সময় বিশ্রামে থাকবে ঢাকা’

ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস
ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস স্কটল্যান্ডের রাজধানী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল শহর এডিনবরার উদাহরণ টেনে বলেছেন, ‘ঢাকা শহরকে বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে। আগামী ১ জুলাই থেকে রাত ৮টার পর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রেস্তোরাঁসহ অত্যাবশ্যকীয় কিছু ছাড়া সব বন্ধ হয়ে যাবে।’

শুক্রবার (১০ জুন) বিকালে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়- বুয়েটের কেন্দ্রীয় অডিটরিয়ামে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। যৌথভাবে এটির আয়োজন করে বুয়েট ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্স বা বিআইপি।

universel cardiac hospital

ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য শহর খোলা থাকার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। কিন্তু ঢাকা শহরের কোনও সময়সীমা নেই, ২৪ ঘণ্টা এই শহরের ওপর অত্যাচার চলে। ঢাকাকেও বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করছি, জুলাই থেকে আমরা এটি বাস্তবায়ন করতে চাই।’

করোনা মহামারির সময়ের অভিজ্ঞতার বিষয়টি সামনে এনে তিনি বলেন, ‘শহরকে রাতে বিশ্রামের সুযোগ দিলে প্রকৃতি আবার জেগে উঠবে। ভোরবেলায় আমরা সুন্দর একটা পরিবেশ পাবো। কেবল কাজ নয়, শহরকে আমরা উপভোগ করতে পারবো। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’ সুন্দর ঢাকা উপহার দিতে এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা এবং জনমত গঠনে সবাইকে সহায়তা করারও আহ্বান জানান তিনি।

ঢাকার জন্য কেমন বনায়ন হবে, সে বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘তিনটি গাছ লাগালে একটি কদম গাছ লাগাতে হবে। এই গাছে নির্দিষ্ট পাখিরা এসে বসে, যারা বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ খেয়ে জীবনধারণ করে। এতে একদিকে আমরা ফুলের শোভা পাবো, অন্যদিকে কীটপতঙ্গ থেকে মুক্তি পাবো। এডিস মশার উৎপাত কমবে, কমে আসবে ডেঙ্গুর প্রকোপও।’

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বৃষ্টিপাতের স্বাভাবিক সময় বদলে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘গত বছর টানা চার মাস বৃষ্টি হয়েছে। আষাঢ়-শ্রাবণের পাশাপাশি ভাদ্র-আশ্বিন মাসেও বৃষ্টি হওয়ায় জলাবদ্ধতা সমস্যা বেড়ে যায়। এতে এডিস মশা ও ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। গত বছর ৩৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, তাতেই ঢাকা নিমজ্জিত। এটি ৪৫৩ মিলিমিটারে পৌঁছালে এই শহর আর বসবাসের জন্য উপযুক্ত থাকবে না। এটি মাথায় রেখেই আমাদের কার্যক্রম সাজাতে হবে।’

বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ ফজলে রেজা সুমনের সভাপতিত্বে সেমিনারে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনার ওপর কি-নোট উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অ্যাডাপটেশন অব আরবান এরিয়াস টু ক্লাইমেট চেইঞ্জ বা জিআইজেড বাংলাদেশের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ড. ডানা দে লা ফনটেইন ও বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আফসানা হক।

শেয়ার করুন