মহানবী (সা.)-কে অবমাননার প্রতিবাদ: উত্তর প্রদেশে গ্রেপ্তার ২২৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির মুখপাত্র (সাময়িক বরখাস্ত) নূপুর শর্মা
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির মুখপাত্র সাময়িক বরখাস্ত হওয়া নূপুর শর্মা। সংগৃহীত ছবি

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মাসহ শীর্ষ দুইনেতার অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে সহিংসতার জেরে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের ছয় জেলা থেকে দুই শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি আজ শনিবার এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজ্যের প্রয়াগরাজ (এলাহাবাদ) জেলা থেকে সর্বোচ্চ ৬৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এদিকে হাথরস জেলায় ৫০ জনকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সরণপুর জেলায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৪৮ জন। এরপর যথাক্রমে আম্বেদকারনগরে ২৮, মোরাদাবাদে ২৫ ও ফিরোজাবাদে ৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

দল থেকে সাময়িক বরখাস্ত বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও বহিষ্কৃত দিল্লি বিজেপি মিডিয়া ইউনিটের প্রধান নবীন জিন্দাল মহানবী (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সবচেয়ে বেশি হয়েছে উত্তর প্রদেশে। বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে এই রাজ্যের ৬ জেলায় মোট ২২৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

পুলিশ বলছে, যেসব স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে সেখানকার ভিডিও ফুটেজ দেখে এসব মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বলেন, বিক্ষোভে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রশাসন থেকে শান্ত থাকার আবেদন সত্ত্বেও এসব স্থানে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের পূর্ণ স্বাধীনতা ও স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যারা আইন হাতে তুলে নেবেন, তাদের কঠোর শিক্ষা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়।

গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর প্রয়াগরাজের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। জেলার অতলা এলাকায় পাথর ছোড়ার ঘটনাও ঘটে। শাহারানপুরে প্ল্যাকার্ড হাতে মানুষকে স্লোগান দিতে দেখা যায়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের থামানোর চেষ্টা করলে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে।

এদিন জুমার নামাজ শেষে বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়। কলকাতায় পার্ক সার্কাস ময়দানে কয়েক শ মানুষ বিক্ষোভে শামিল হন। তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশের রাজধানী হায়দরাবাদেও বিক্ষোভ হয়। পাঞ্জাবের লুধিয়ানা, গুজরাটের আহমেদাবাদ, মহারাষ্ট্রে নাবি মুম্বাই, কাশ্মীরের শ্রীনগরের বিভিন্ন এলাকা থেকেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়। এদিকে ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিতে পুলিশের গুলিতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আহত ১০ জন হাসপাতালে। তাদের চিকিৎসা চলছে।

শেয়ার করুন