‘রাজনীতি–সেই সময় আর এই সময়’

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। ফাইল ছবি

ছাত্রকর্মী হিসেবে আমার কাজ শুরু ১৯৬৫ সাল থেকে, যখন আমি মাদ্রাসা–ই-আলিয়া ঢাকা–এর একজন ছাত্র। ১৯৬৫-এর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন আমার ছাত্ররাজনীতির অ আ ক খ–এর তালিম নেওয়াও শুরু হয়। মাদ্রাসা–ই–আলিয়া, ঢাকা–এর ছাত্র সংসদের সদস্য নির্বাচিত হই ১৯৬৬ সালে। পরের বছর মাদ্রাসা–ই–আলিয়া, ঢাকা–এর বার্ষিক সম্পাদনা পরিষদেরও সদস্য নির্বাচিত হই। আমাদের সংগঠনটি ছিল জামায়াতে ইসলাম বিরোধী এবং মাদ্রাসা ছাত্রদের শিক্ষা সম্পর্কিত দাবিদাওয়া নিয়ে কাজ করত।

এই সময়টাতে আমরা বেশ কয়েকজন দেশ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করি। আমাদের সকলেই ছিলাম পোশাক-পরিচ্ছদে আধুনিক এবং মানবিক দিক দিয়ে ধর্মীয় চেতনায় উদারপন্থী। বাংলা একাডেমির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শক হিসেবে অংশগ্রহণ এবং শিক্ষাঙ্গনে নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে আমরা সর্বদাই তৎপর ছিলাম। এই সময় (বঙ্গবন্ধু) শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষের মুক্তির সনদ ৬ দফা দাবি রাজনীতির মাঠে নিয়ে আসলে, আমাদের বন্ধুদের দৃষ্টিতে তা উঠে আসে। আমাদের বন্ধুরা মাদ্রাসা অঙ্গনে আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠে এবং ছাত্রলীগের সাথে যোগাযোগ স্থাপন শুরু করি। এই করেই আমি ঢাকা কলেজে ভর্তি হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের সমর্থন নিয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদে ছাত্রলীগের মনোনয়নে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হই এবং নির্বাচিত হই ১৯৬৯ সালে।

জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের উত্তাল তরঙ্গে ভাসছে সারা দেশ। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বেড়াজাল ভেঙে জনতার নেতা, বাঙালির নেতা, স্বপ্নের পুরুষ শেখ মুজিবুর রহমান ফিরে এলেন আর কৃতজ্ঞ বাঙালি তোফায়েল আহমেদের বেশ ধরে তাঁকে বরণ করে নিল বঙ্গবন্ধু হিসেবে। মহাত্মা গান্ধী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ আর নেতাজী সুভাসচন্দ্র বোসের কাতারে যুক্ত হলো আরও একটি নাম। ডাক আসলো দেশের জন্য জীবনদানের। রাজনীতির সেই সময় আর রাজনীতির এই সময়, কেমন সময়? আমাদের জীবন গাঁথা এই চক্র ঘিরেই।

লেখক : সংসদ সদস্য, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা,
পঁচাত্তর-পরবর্তী প্রতিরোধ যোদ্ধা,
সম্পাদক, মত ও পথ।

শেয়ার করুন