ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির ৫০ বছর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯৭২ সালের ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ইতিহাসে বহুল আলোচিত একটি ঘটনা। প্রতিবছর ১৭ জুন এই কেলেঙ্কারির বিষয়টি সামনে আসে। মার্কিন ইতিহাসের অন্যতম রাজনৈতিক কেলেঙ্কারির এ ঘটনায় রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। এ কেলেঙ্কারির ঘটনার ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামীকা শুক্রবার। এএফপির এক প্রতিবেদনে ওই সময়কার ঘটনাক্রম তুলে ধরা হয়েছে।

ওয়াশিংটনের একটি হোটেলের নাম ওয়াটারগেট। সেখানে ডেমোক্র্যাট ন্যাশনাল কমিটির কার্যালয় ছিল। ১৯৭২ সালের ১৬ জুন রাত থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত ওয়াটারগেট হোটেল এবং অফিস কমপ্লেক্সে ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির সদর দপ্তরে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে আড়ি পাতার যন্ত্র উদ্ধার করা হয়।

universel cardiac hospital

পরের দিন ওয়াশিংটন পোস্ট তার প্রথম পৃষ্ঠায় বড় এক কেলেঙ্কারির খবর ছাপায়। এ খবর রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের পুনর্নির্বাচনের প্রচারণায় বড় ধাক্কা দিতে সক্ষম হয়। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির বিষয়টি অনুসন্ধান করেন দুই তরুণ প্রতিবেদক বব উডওয়ার্ড এবং কার্ল বার্নস্টাইন। তাঁরা তুলে ধরেন আড়ি পাতার পেছনে নিক্সনের পুনর্নির্বাচন কমিটির সদস্য এবং সিআইএর সাবেক সদস্য জেমস ম্যাককর্ডের নাম।

তরুণ সাংবাদিকেরা দাবি করেন, এ ঘটনায় হোয়াইট হাউসের হাত রয়েছে। তবে ২২ জুন নিক্সন তা অস্বীকার করেন। কিন্তু ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। দুই সাংবাদিকের প্রতিবেদনের মধ্য দিয়ে ব্যাপক নজরদারি এবং নোংরা প্রতারণার ঘটনা প্রকাশিত হয়। পরিণামে প্রেসিডেন্ট নিক্সন ১৯৭৪ সালে অভিশংসনের মুখোমুখি হন।

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন তখন দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তাঁর নির্বাচন কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন প্রতিপক্ষ ডেমোক্রেটিক পার্টির খবর পেতে ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত দলটির সদর দপ্তরে গোপনে টেপ রেকর্ডার স্থাপন করেছিলেন। ঘটনাটি ফাঁস হওয়ার পর হোয়াইট হাউসের কয়েকজন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন এবং একজনকে বরখাস্ত করা হয়। পরে ওই বছরের ৬ নভেম্বর নিক্সন দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।

১৯৭৪ সালের এপ্রিলে চাপের মুখে কিছু টেপ প্রকাশ করেন নিক্সন। জুলাইয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে টেপগুলো হস্তান্তর করেন নিক্সন। স্বীকার করেন, আড়ি পাতা সম্পর্কে জানতেন তিনি। এফবিআইয়ের তদন্তে বাধা দিয়েছিলেন। আগস্ট নাগাদ জনমত চলে যায় বিপক্ষে। শুরু হয় সাংবিধানিক সংকট। কংগ্রেসের একটা বড় অংশ চলে যায় নিক্সনের বিরুদ্ধে। এ অবস্থায় কংগ্রেসে অভিসংশন শুনানি এড়াতে ১৯৭৪ সালের ৮ আগস্ট পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

শেয়ার করুন