চীনের কৌশলগত পরিকল্পনা ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড (সংক্ষেপে ওবর)’ বা ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই)’ আওতায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে—মহল বিশেষের এমন প্রচারণা নাকচ করেছে সরকার।
শুক্রবার (১৭ জুন) ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে সম্পূর্ণ অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার। কোনো দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় অর্থায়ন সংস্থার কোনো বিদেশি তহবিল এই সেতু নির্মাণে আর্থিকভাবে ভূমিকা রাখেনি।
ঢাকায় ‘বাংলাদেশ-চীন সিল্ক রোড ফোরাম’ আগামী ২২ জুন পদ্মা সেতু নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করেছে। সেই আলোচনার আমন্ত্রণ পত্রে আলোচ্য বিষয় হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘পদ্মা সেতু: বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতার দৃষ্টান্ত’। আমন্ত্রণ পত্রে ওই অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক হিসেবে ঢাকায় চীনা দূতাবাসেরও নাম রয়েছে।
বাংলাদেশ-চীন সিল্ক রোড ফোরামের সভাপতি দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ওই আলোচনায় ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক ফি শুসা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে আমন্ত্রণপত্রে বলা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৫ জুন পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধন করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে, বিভিন্ন মহল দেখানোর চেষ্টা করছে যে পদ্মা সেতু ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের’ অংশ এবং বিদেশি অর্থায়নে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুস্পষ্টভাবে দাবি করছে, পদ্মা বহুমুখী সেতু সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে এবং অন্য কোনো দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক তহবিল সংস্থার কোনো বিদেশি তহবিল এটি নির্মাণে আর্থিকভাবে অবদান রাখেনি। বাংলাদেশি ও বিদেশি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নিয়োজিত ছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই সেতু নির্মাণের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলাকে দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সংযুক্ত করার দীর্ঘকালের লালিত স্বপ্ন পূরণ হবে। এর ফলে বাংলাদেশের সামষ্টিক সমৃদ্ধি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে আশা করে, বাংলাদেশের সব বন্ধু এ দেশের এই যুগান্তকারী প্রকল্পের সমাপ্তি উদযাপনে অংশ নেবে। এর আরও বিশেষ কারণ হলো, এই সেতু সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের অবদানে সম্পন্ন হয়েছে।