বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে গেছে সেতু, ট্রেন চলাচল বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা-মোহনগঞ্জ রেলপথের বারহাট্টা এলাকায় বন্যার পানির চাপে একটি সেতু ভেঙে গেছে
ঢাকা-মোহনগঞ্জ রেলপথের বারহাট্টা এলাকায় বন্যার পানির চাপে ভেঙে যাওয়া সেতু। সংগৃহীত ছবি

নেত্রকোনার বারহাট্টায় বন্যার পানির তোড়ে উপজেলার অতিতপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন রেললাইনের ৩৪ নম্বর রেল সেতুটি ভেঙে গেছে। এতে ঢাকা-মোহনগঞ্জ রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন বারহাট্টা উপজেলার স্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী।

তিনি বলেন, রেল সেতু ভেঙে মোহনগঞ্জের সঙ্গে ঢাকা-ময়মনসিংহসহ সারা দেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে আন্তঃনগর ট্রেন হাওর এক্সপ্রেস মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারেনি। আবার ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা ২৬২ নম্বর লোকাল ট্রেনও আটকা পড়েছে বারহাট্টা স্টেশনে। তবে লোকাল ট্রেনটি বারহাট্টা থেকে ঘুরিয়ে ময়মনসিংহ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

universel cardiac hospital

গত বুধবার থেকেই বারহাট্টায় ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে জানিয়ে গোলাম রব্বানী বলেন, বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার কারণে উপজেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তীব্র পানির চাপ থাকার কারণে ৩৪ নম্বর রেল সেতুর পাশের মাটি সরে ভেসে গেছে।

পানির স্রোত বেশি থাকায় এবং রেল সেতুর পাশের মাটি বেশি পরিমাণে সরে যাওয়ায় খুব দ্রুত এটি সংস্কার করা সম্ভব নয়। তাই রেল সেতুটি সংস্কারে একটু সময় লাগবে বলেও জানান এই স্টেশন মাস্টার।

জানা গেছে, নেত্রকোনায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। এর মধ্যে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, মোহনগঞ্জ, মদন, খালিয়াজুরিসহ ছয়টি উপজেলায় প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। এসব উপজেলার প্রায় ছয় লাখ মানুষ পানিবন্দী। জেলার সঙ্গে কলমাকান্দা উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, জেলার ছয়টি উপজেলায় ১৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার মানুষ ঠাঁই নিয়েছে। বন্যাকবলিত প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল দল নিয়োজিত। জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন এনজিও, স্বেচ্ছাসেবীসহ প্রশাসনের সহায়তায় বন্যাকবলিত মানুষ ও তাদের গবাদিপশুদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে।

বন্যাদুর্গত এলাকায় ইতিমধ্যে দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত ব্যক্তিদের জন্য ৬০ মেট্রিক টন জিআর চাল ও আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

শেয়ার করুন