দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিরাপদ প্রত্যাবাসনে গুরুত্বারোপ করেছে ঢাকা-দিল্লি।
১৯ জুন (রোববার) নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ- ভারতের জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের – জেসিসির সপ্তম রাউন্ড বৈঠকে এই তাগিদ দেওয়া হয়।
নয়াদিল্লিতে জেসিসির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতকে দ্বিপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে উল্লেখ করে দুই মন্ত্রী প্রশংসা করেন।
তারা জানান, গত দশকে দুই দেশের আস্থা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা শক্তিশালী হয়েছে। এর একটি সাম্প্রতিক উদাহরণ ২০২২ সালের মে মাসে কান চলচ্চিত্র উৎসবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর যৌথভাবে নির্মিত বায়োপিক ‘মুজিব – মেকিং অফ এ নেশন’-এর ট্রেলার উদ্বোধন ।
বৈঠকে দুই মন্ত্রী করোনার বিরুদ্ধে যৌথভাবে লড়াইয়ের জন্য উভয় দেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তারা ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ এবং মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠক, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে জেসিসির ভার্চুয়াল বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নসহ চলমান সহযোগিতার সব ক্ষেত্রগুলো ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা করেন।
করোনা মহামারির চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও উভয় দেশ নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করে।
বৈঠকে দুই মন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে সংযোগ, জ্বালানি সহযোগিতা, উন্নয়ন সহায়তা, সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া অভিন্ন নদী ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, তথ্যপ্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, টেকসই বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও গভীর ও জোরদার করতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।
জেসিসি বৈঠকে উভয় পক্ষই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বর্তমানে বাংলাদেশ আশ্রয়প্রাপ্ত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের নিরাপদ, দ্রুত এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করে উভয় মন্ত্রী নেতাদের সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে জোর দেন। একই সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সব ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পৃক্ততাকে আরও গভীর ও শক্তিশালী করার জন্য ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।
নয়াদিল্লিতে সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ভারতের উপরাষ্ট্রপতি এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু এবং ভারত সরকারের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
এর আগে জেসিসি বৈঠকে যোগ দিতে শনিবার দিল্লি যান পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. মোমেন।