পদ্মা সেতু : মোংলার ব্যবসায়ীদের বাঁচবে ১২ ঘণ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সংবাদে উচ্ছ্বসিত দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে ব্যবসায়ীরা। কারণ, এই সেতুর কারণে যেমন দক্ষিণাঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে, তেমনি গড়ে উঠবে শিল্প-কারখানা। প্রসার ঘটবে চলমান ব্যবসা-বাণিজ্যের। মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানালেন, পদ্মা সেতু চালুর পর তাদের ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় বাঁচবে।

ওই ব্যবসায়ীদের মতে, প্রথমত, মোংলা বন্দর থেকে ঢাকায় পণ্য রফতানিতে লাগবে মাত্র ৩ ঘণ্টা। আগে লাগতো ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা। এখানে বাঁচবে ৬ ঘণ্টা। মোংলা থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে আগে লাগতো ১৪ ঘণ্টা। সেতুর কারণে তা কমে হবে ৭-৮ ঘণ্টা। এখানেও বাঁচবে ৬ ঘণ্টা। সব মিলিয়ে ১২ ঘণ্টা সময় এগিয়ে থাকবেন ব্যবসায়ীরা। এই বেঁচে যাওয়া সময়টাকেই তারা বড় পুঁজি হিসেবে দেখছেন।

universel cardiac hospital

মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ও ব্যবসায়ীদের সংগঠন খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি মোস্তফা জেসান ভুট্টো বলেন, পণ্য নিয়ে ঢাকা বা চট্টগ্রামে গেলে পদ্মার ফেরিতেই আটকে থাকতে হতো কয়েক ঘণ্টা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বেঁচে যাওয়া সময়ের কারণেই ব্যবসা-বাণিজ্য বহুগুণে বাড়বে বলে এই ব্যবসায়ী নেতার প্রত্যাশা।

মোংলা বন্দর বার্থ-শিপ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ সেরনিয়াবাত এবং বন্দর ব্যবহারকারী এস এম মোস্তাক মিঠু, এইচ এম দুলাল ও মশিউর রহমান বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ দেশের মেগা প্রকল্প নির্মাণের মালামাল এই বন্দরের মাধ্যমেই আমদানি হয়েছে। আমরাই এখান থেকে আমদানি হওয়া পণ্য খালাস করে নদী ও সড়কপথে প্রকল্প এলাকায় পৌঁছে দিয়েছি। এতদিন পদ্মা সেতুর অভাবে সেসব মালামাল দেরিতে পৌঁছেছে। ফেরিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতো।’

এখন সেতু চালু হলে সেই সমস্যায় আর পড়তে হবে না জানিয়ে এই ব্যবসায়ীরা বললেন, বেঁচে যাওয়া সময়টাও কাজে লাগবে পণ্য খালাস হওয়ার পেছনে। এতে অন্য সব পণ্যও দ্রুত দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছাবে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর এই বন্দরের গতি বেড়ে যাবে। দ্রুত এ বন্দর থেকে পণ্যবাহী কন্টেইনার ও কারগো হ্যান্ডলিং করা যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকিএমইএ) তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এখানে তারা বিনিয়োগ করবেন। তারা এই বন্দরের সক্ষমতা সম্পর্কে অবহিত।’

এছাড়া, বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানিও যোগাযোগ করেছেন বলে জানালেন রিয়ার অ্যাডমিরাল মুসা।

মোংলা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মাহাবুব আহম্মেদ সিদ্দিক বলেন, সেতু হওয়ার পর ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক সহজ হবে। বিনিয়োগকারীদের কাঁচামাল আগে যেখানে জাহাজে আসতো, সেখানে এখন সড়ক পথে আসবে। সেতুটি চালু হলে এই ইপিজেডে বিনিয়োগকারীও বাড়বে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন