এবার ভরা মৌসুমেও দাম কমেনি চালের। খাদ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রায় এক মাস ধরে দফায় দফায় অভিযান পরিচালনা করছে চালের বাজারে। এর পরও দাম কমেনি, উল্টো বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি আমদানিকারকদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় বলছে, বাজারে চালের সরবরাহ বাড়লে দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। সেই উদ্দেশ্যে বেসরকারিভাবে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৩ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চাল আমদানিতে শুল্ক্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ ভাগ নির্ধারণ করেছে।
গত বছরও বেসরকারিভাবে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। সে সময় দুই দফায় শুল্ক্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি হয়নি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছর বেসরকারি পর্যায়ে ১৭ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত এসেছিল মাত্র ৩ লাখ টনের কিছু বেশি।
দেশে সবচেয়ে বেশি চাল উৎপাদন হয় বোরো মৌসুমে। ফলে প্রতি বছর এই মৌসুমে চালের দাম কিছুটা কম থাকে। কিন্তু এবার বন্যায় উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অজুহাতে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে দাম। গত এক-দেড় মাসে প্রতি কেজিতে গড়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার বিশ্নেষণের তথ্যমতে, গতকাল ঢাকার বাজারে সরু চাল বিক্রি হয়েছে (নাজিরশাইল ও মিনিকেট) ৬৪ থেকে ৮০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও দাম ছিল ৬৪ থেকে ৭৫ টাকা। মোটা চালের (গুটি স্বর্ণা ও চায়না ইরি) দামও বেড়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের (এফপিএমইউ) বিশ্নেষণে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ড, ভারত, ভিয়েতনাম ও পাকিস্তান চাল রপ্তানি করছে ৩৬০ থেকে ৪৪৪ মার্কিন ডলারে। অভ্যন্তরীণ বাজারে এই চালের সম্ভাব্য দাম পড়তে পারে ৩৬ থেকে ৪৭ টাকা কেজি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেন সমকালকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ৮ থেকে ১০ লাখ টন চাল বেসরকারিভাবে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে আমদানির পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।