ভারতে একটি ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের সরব সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক মোহাম্মদ জুবাইর। খবর বিবিসির।
গণমাধ্যম সংগঠনগুলোর একটি নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, অল্ট নিউজের এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের এক টুইটে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিরোধী দলের নেতা ও অ্যাকটিভিস্টরা জুবাইরের মুক্তি দাবি করেছেন। তারা বলছেন, যারা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য জনসম্মুখে তুলে ধরেন, তাদের দমনে এটি হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকারের সুস্পষ্ট প্রচেষ্টা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি একটি টেলিভিশন বিতর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র নূপুর শর্মা। জুবাইর তার ওই মন্তব্যের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেন। তার টুইট ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়। এ ঘটনায় ভারতের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানায় কয়েকটি মুসলিম দেশ।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় হিন্দু জাতীয়তাবাদী ব্যক্তিরা জুবাইর অতীতে কী মন্তব্য করেছেন, তা সামনে আনেন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে তাকে বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানান তাঁরা।
দিল্লি পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে এএনআই বলেছে, একজন টুইটার ব্যবহারকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে জুবাইরকে আটক করা হয়। তার দাবি, হিন্দু দেবতা হনুমানের নামে একটি হোটেলের নাম রাখার কথা বলে ২০১৮ সালে একটি টুইট করেন এই সাংবাদিক। এতে তিনি হিন্দুদের অপমান করেছেন।
দেশটির অনেক সাংবাদিক অবিলম্বে মোহাম্মদ জুবাইরের মুক্তি দাবি করেছেন। সাংবাদিক রানা আইয়ুব বলেন, জুবাইর নিয়মিত ভুয়া খবর ফাঁস করে দিতেন। ভারতে বিদ্বেষ ছড়ানো চক্রের মুখোশ খুলে দিতেন তিনি। এ জন্যই তাকে গ্রেপ্তার করা হলো। দেশের অধঃপতন নিয়ে যারা লিখছেন ও তথ্য সংগ্রহ করছেন, তাদের শাস্তি দিচ্ছে সরকার।
বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী এক টুইটে বলেছেন, যারাই বিজেপির বিদ্বেষ, ধর্মান্ধতা ও মিথ্যা নিয়ে বলবে, প্রত্যেকেই তাদের কাছে হুমকিস্বরূপ। তিনি বলেন, একজন সত্যবাদীকে গ্রেপ্তার কেবলই হাজারো সত্যবাদীর জন্ম দেবে।