জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি (পাস) ও অনার্সে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে কারিগরি ট্রেড। বিদ্যমান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এই ট্রেড কোর্স চালু করবে বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রথমে মূল ক্যাম্পাস, পরে আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং সবশেষে কলেজগুলোয় এই কোর্স চালু হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি (পাস) ও অনার্স পর্যায়ে অন্তত চারটি ট্রেড কোর্স কোর্স বাধ্যতামূলক করা হবে। প্রথমে মূল ক্যাম্পাসে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা চালু করব। তারপর আমাদের ছয়টা আঞ্চলিক কেন্দ্রে চালু করব, যাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাস করে এ রকম একটি ডিপ্লোমার মধ্যে এসে নিজেদের স্কিল ডেভেলপ করতে পারেন।
সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে ১২টি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা (পিজিডি) কোর্সের অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। কোর্সগুলো হলো— ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি), ল্যাঙ্গুয়েজ ইংলিশ অ্যান্ড অ্যারাবিক, এন্ট্রাপ্রেনারশিপ, ফার্মিং টেকনোলজি, ডাটা অ্যানালাইসিস, ট্যুরিজম অ্যান্ড ট্রাভেল ম্যানেজমেন্ট, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, ক্যাপিটাল মার্কেট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, সার্টিফাইড অ্যাকাউন্টিং টেকনিশিয়ান, সাইবার সিকিউরিটি, সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট।
এই ১২টি কোর্সের টাইটেল, আউট লাইন, সিলেবাস, প্রোপোজাল, অবজেকটিভসসহ বিভিন্ন বিষয়ে গত ১২ জুন একটি কর্মশালা করা হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হলে অনার্স বা ডিগ্রি পাস কোর্সের মধ্যে ছোট ছোট কোর্স এমবেড করতে হবে। রেগুলোর কোর্সের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা এই কোর্সগুলো করবে।
কোর্স চালুর বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, আইসিটি, এন্টারপ্রেনরশিপ, ডিজিটাল মার্কেটিং ল্যাঙ্গুয়েজ এরকম তিন-চারটি কোর্স ডিগ্রি ও অনার্সের সব শিক্ষার্থীরা যেন পড়তে পারে। কোর্স হিসেবে পড়ে যদি কেউ মনে করে আরও স্টাডি করা দরকার আছে, তখন ফুল ডিপ্লোমা করবে। ডিগ্রির স্টুডেন্ট তিন বছর ডিগ্রি করবে বা চার বছরের অনার্স যারা করবে তারা পরে যদি ৯ বা ১২ মাসের একটি কোর্সে করে ফেলতে পারে তাহলে বাজারে তাদের ডিমান্ড তৈরি হবে। ইতোমধ্যে ১২টি কোর্স অনুমোদন নিয়েছি। কনটেন্ট ও সিলেবাস তৈরি করবো।
টেড কোর্স চালু কবে নাগাদ হতে পারে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের যে প্রজেক্ট আছে তা করোনার কারণে খরচ হয়নি। সেখান থেকে যদি কিছু ফান্ড পাই, সেই ফান্ড থেকে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেব। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তারা অভিজ্ঞ হবেন। ডিগ্রি এবং অনার্স পর্যায়ে সবগুলো কোর্স না পারি যেকোনো চারটি কোর্স বাধ্যতামূলক করব। কিন্তু যারা পড়াবে তাদের আগে তৈরি করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্পের টাকা খরচ করা যায়নি। ওই টাকার মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা চাইবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। সরকার যদি এই টাকা অনুমোদন দেয় তাহলে বিদ্যমান শিক্ষকদের যাচাই করে প্রশিক্ষণ দিয়ে অভিজ্ঞ করা হবে।
উপাচার্য বলেন, সরকার ওই টাকা শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য অনুমোদন দিলে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শিক্ষকরা অভিজ্ঞ হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস, আঞ্চলিক কেন্দ্র ছাড়াও কলেজগুলোয় চালু করতে পারব। কোর্স বাস্তবায়নে প্রয়োজনে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করব।