আলোচিত প্যারিস হামলার একমাত্র জীবিত আসামি সালাহ আবদেসালাম সন্ত্রাসবাদ ও হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ফ্রান্সে একটি আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। ২০১৫ সালের নভেম্বরে প্যারিসে একদল সন্ত্রাসীর বোমা ও বন্দুক হামলায় ১৩০ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। খবর বিবিসি অনলাইনের।
সাত বছর আগে প্যারিসে ভয়াবহ ওই সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত আরও ১৯ জন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই মামলার বিচার শুরু হয়েছিল। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড় বিচারের ঘটনা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাণঘাতী হামলার জন্য প্যারিসে একটি বিশেষ আদালত গঠন করা হয়েছিল। নয় মাস ধরে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার, হামলার শিকার লোকজন ও সাংবাদিকদের নিয়ে মামলাটির শুনানি চলছিল। সবার উপস্থিতিতে স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার বিশেষ আদালত রায় ঘোষণা করেন।
২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের অন্তত ছয়টি স্থানে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এতে ১৩০ জন নিহত ছাড়াও কয়েক শ আহত হন। সাতজন হামলাকারীও প্রাণ হারান। এ ঘটনার দায় স্বীকার করে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
প্যারিসের বিশেষ আদালতে বিচার শুরুর প্রথম দিকে সালাহ আবদেসালামের আচরণ ছিল বেপরোয়া। তখন তিনি নিজেকে আইএসের একজন ‘যোদ্ধা’ হিসেবে বর্ণনা করেন। পরে অবশ্য হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ক্ষমা চান। শেষ মুহূর্তে আদালতে তিনি বলেন, হত্যাকারী নন, তাই তাকে অভিযুক্ত করা হবে ‘অবিচার’।
বিচার চলাকালে সালাহ আবদেসালাম আরও দাবি করেন, হামলার রাতে বিস্ফোরক ভেস্ট বিস্ফোরিত না করার সিদ্ধান্ত নেন এবং ভেস্ট খুলে প্যারিসের শহরতলিতে ফেলে দেন।
তবে বিস্ফোরকের ওই ভেস্টে যে ত্রুটি ছিল এবং সেটি বিস্ফোরিত হয়নি, সেই দাবির পক্ষে প্রমাণ গ্রহণ করলেও সালাহ শেষ মুহূর্তে এসে মন পরিবর্তন করেছিলেন—এমন দাবি আদালত মেনে নেননি। এ কারণে ওই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ফ্রান্সে যাবজ্জীবনের নজির খুব বেশি নেই।