জনগণ নিজের হাতে ভোট দেবে, মেশিনে নয় : খন্দকার মোশাররফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

খন্দকার মোশাররফ হোসেন
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ফাইল ছবি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে জনগণ নিজের ভোট নিজ হাতে দেবে, মেশিনে (ইভিএম) নয়।

তিনি বলেন, এখন আমাদের সামনে একটি চ্যালেঞ্জ। তা হলো এই গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে বিদায় করতে হবে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই নির্বাচনে জনগণ নিজের হাতে নিজের ভোট দেবে, মেশিনে নয়। এই দায়িত্ব বিএনপিকে নিতে হবে।

universel cardiac hospital

শুক্রবার (১ জুলাই) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিচে এক দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।

মোশাররফ বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়া একটি বানোয়াট মামলায় ফরমায়েশি রায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। বর্তমানে প্রশাসনিক অর্ডারে সাময়িকভাবে মুক্ত। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ, কিছুদিন পূর্বে হাসপাতালে তার অস্ত্রপচার করা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় দিন পার করছেন।

খালেদা জিয়া অসুস্থতার জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে তাকে নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছিল, যেখানে আর কোনো মানুষ ছিল না। এমন একাকীত্ব অস্বাভাবিক পরিবেশে তাকে রাখা হয়েছিল। যে নেত্রী পায়ে হেঁটে গাড়িতে উঠে কারাগারে গিয়েছিলেন, কিন্তু সম্পূর্ণ অসুস্থ অবস্থায় সাময়িক মুক্তি পান। অর্থাৎ দেশনেত্রীকে কারাগারে রেখে তিলে তিলে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে সরকার।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়া এতটাই অসুস্থ তার চিকিৎসকরা বারবার বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিতে বলছেন। কেননা বাংলাদেশে তার সেই চিকিৎসা নেই, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন কিন্তু সরকার কর্ণপাত করেনি। আজকে বিএনপি নেতাকর্মীসহ সবার দাবি তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হোক। সরকারের পাঠানোর প্রয়োজন নেই। খালেদা জিয়া নিজেই চিকিৎসার জন্য যাবেন। কিন্তু তাকে সাময়িক মুক্তি দেওয়ার সময় যে শর্ত দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করা হোক। সরকার তা করছে না।

তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে একটাই অস্ত্র, খালেদা জিয়াকে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে এবং বিএনপি পরিবারকে দাবিয়ে রেখে তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়।

সরকারের অবহেলার কারণে দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন খন্দকার মোশারফ। তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে চীনে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও সরকার কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এখন আবার করোনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, আমাদের নেতৃবৃন্দ আক্রান্ত। এখানেও সরকারের ব্যর্থতা এবং অসাবধানতা।

সিলেট বিভাগে আবার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, এই পানিগুলো কোথা থেকে আসছে? আমাদের ওপরের দেশ (ভারত) সেখান থেকে পানিগুলো আসছে। ফারাক্কায় ৫৪টি বাঁধ দেওয়া রয়েছে। বর্ষাকালে যখন অতিবৃষ্টি হয় তখন ভারত তাদের স্বার্থে সবগুলো গেট একসাথে খুলে দেয়। আর পানি বাংলাদেশে চলে আসে। অন্যদিকে বাংলাদেশে শুষ্ক মৌসুমে পানি কম থাকার কারণে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করে যখন পানি আসে তখন পানি যাওয়ার কোনো জায়গা পায় না। এ কারণেই বাংলাদেশে এত বন্যা হচ্ছে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, যখন আমাদের পানির প্রয়োজন নেই তখন পানি দিয়ে বন্যায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। যখন পানির প্রয়োজন হয় তখন পানি না দেওয়ার কারণে নদীগুলো মরে যায়। জীববৈচিত্র্য, কৃষি বিপর্যস্ত হয়। ভবিষ্যতে আরও বিপর্যস্ত হবে। সরকারের ব্যর্থ কূটনীতির কারণে এমন হচ্ছে।

দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, রফিকুল আলম মঞ্জু প্রমুখ।

শেয়ার করুন