সব ধরনের ভিসা আবেদন নেয়ার জন্য ঢাকায় অন্তত একটি কনস্যুলার সার্ভিস সেন্টার খুলতে পর্তুগালের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
শুক্রবার (১ জুলাই) পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জোয়াও গোমেজ ক্রাবিনহোর সঙ্গে লিবসনে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠককালে তিনি এ আহ্বান জানান।
শনিবার (২ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, লিসবনে গত ১০ বছর ধরে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিচালনা করে আসছে। সম্প্রতি মিশনটির স্থায়ী ঠিকানার জন্য সেখানে জমিও কেনা হয়েছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ-পর্তুগাল কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশে পর্তুগালের একটি চ্যান্সারি খোলা হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটা দুই দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। বৈঠককালে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ ও পর্তুগালের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার উপায় বের করতে পরস্পরকে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
ষোড়শ শতকের গোড়ার দিকে বাংলাদেশ ও পর্তুগালের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা স্মরণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বন্ধুপ্রতীম দেশ দুটির উচিত তাদের পারস্পরিক স্বার্থে ইতিহাসের এই ইতিবাচক সম্পর্কের ভিত্তিতে বর্তমান সময়ে সহযোগিতার আরো জোরদার করা। এ সময় তিনি বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মানবসম্পদ, সমুদ্র অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের মতো ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতার ওপর জোর দেন।
ড. মোমেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, বিশেষত নারী ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার পাশাপাশি দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ব্যাপারে পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবগত করেন।
তিনি বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে বিশ্বের অন্যতম প্রমত্তা নদীর ওপর সদ্য-উদ্বোধনকৃত পদ্মাসেতু, নতুন বাংলাদেশের প্রতীক। এই বাংলাদেশ সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম। পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে তার দেশের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেন।
পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরামর্শগুলো শুনেন এবং এর ওপর কাজ করার আশ্বাস দেন। তিনি বাংলাদেশি প্রবাসী সম্প্রদায়কে পর্তুগাল সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং পর্তুগালের অর্থনীতিতে তারা অবদান রাখছে বলে অভিহিত করেন।
উভয় দেশই দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক পর্যায়ে ‘জলবায়ু শরণার্থী’ পুনর্বাসনের মতো জলাবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করতেও সম্মত হয়। দুই মন্ত্রী আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়নের বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
এ সময় মোমেন জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক প্লাটফরমে পর্তুগাল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের জন্য পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানালে, তিনি তা সাদরে গ্রহণ করেন।
বৈঠককালে মোমেনের সঙ্গে লিসবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমুদ্র সম্পর্কিত ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম ও অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।