ঘুষ দিয়ে আইনজীবী ও শ্রমিক নেতাদের হাত করেন ইউনূস!

নিজস্ব প্রতিবেদক

ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি

শ্রমিকদের মামলা প্রত্যাহারে রাজি করাতে দুই আইনজীবী ও ৩ শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাকে ২৪ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন ‘গ্রামীণ টেলিকম’। এরইমধ্যে সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের দুই আইনজীবী ও তিন শ্রমিক নেতার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গেল ২৫ মে বিচারপতি খুরশীদ আলমের আদালতে গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে দায়ের করা কোম্পানি অবসায়ন মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন শ্রমিক ইউনিয়নের আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী এবং গ্রামীণ টেলিকমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান।

আদালতকে তারা জানান, গ্রামীণ টেলিকম প্রতিষ্ঠানটির ১৭৬ জন কর্মচারীকে বকেয়া লভ্যাংশ হিসেবে ৪৩৭ কোটি টাকা প্রদান করবে এবং বিনিময়ে শ্রমিকরা ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করে নেবে।

তবে সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টটির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তিনটি চেকের মাধ্যমে ২৬ কোটি ২২ লাখ টাকা গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের অ্যাকাউন্টে দেয়া হয়। পরবর্তীকালে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা দেয়া হয় দুই আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান চৌধুরীকে। তিন কোটি টাকা করে দেয়া তিন শ্রমিক নেতা মো. কামরুজামান, ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও মাইনুল ইসলামকে।

শ্রমিকদের লভ্যাংশ প্রদানের অর্থ আইনজীবী ও শ্রমিক নেতাদের মাঝে ভাগ বাটোয়ারার বিষয়টি একটি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে গত ৩০ জুন বিচারপতি খুরশীদ আলম গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন মামলাটি ফের রিকল করেন এবং এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের আইনজীবীর কাছে এ বিষয়ে কৈফিয়ত চান। এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী আদালতে এ ধরনের কোনো লেনদেনের কথা অস্বীকার করলে দুই পক্ষের আইনজীবীকে আগামী ২ আগস্টের মধ্যে লভ্যাংশ প্রদান সংক্রান্ত সব দালিলিক প্রমাণাদির এফিডেভিট কপি আদালতে জমা প্রদানের নির্দেশ দেন বিচারপতি খুরশীদ আলম।

গ্রামীণ এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের আইনজীবী শ্রমিকদের লভ্যাংশ থেকে অর্থ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলেও বাংলাদেশের ব্যাংকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুই আইনজীবী এবং তিন শ্রমিক নেতার অ্যাকাউন্টে ২৪ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতেই তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। অধিকতর তদন্তশেষে এ বিষয়ে পরবর্তীকালে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

এর আগে আদালত ও সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে বিবদমান মামলাসমূহের রায় নিজেদের পক্ষে আনার জন্য ২০২১ সালেও প্রায় ১৪ কোটি টাকা দিয়ে ‘ঢাকা লজিস্টিকস সার্ভিসেস অ্যান্ড সল্যুশন’ নামক লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দিয়েছিল ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম। তখন সফল হতে না পারলেও এবার আইনজীবী ও শ্রমিক নেতাদের ২৪ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে শ্রমিকদের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নিতে সক্ষম হয় গ্রামীণ টেলিকম।

শেয়ার করুন