সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নি‌তে সম্মত ঢাকা-‌লিসবন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলা‌দেশ ও পর্তুগাল বৈঠক
সংগৃহীত ছবি

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও অনন্য উচ্চতায় নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে বাংলা‌দেশ ও পর্তুগাল।

শুক্রবার (১ জুলাই ) লিসব‌নে জা‌তিসং‌ঘের দ্বিতীয় সমুদ্র স‌ম্মেল‌নের ফাঁ‌কে দ্বিপা‌ক্ষিক বৈঠক ক‌রেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পর্তুগিজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জোয়াও গোমেস ক্রাভিনহো। এ সময় উভয়মন্ত্রী সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নি‌তে সম্মত হন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দুই দে‌শের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে এ‌টি ছিল প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। ড. মো‌মেন ষোড়শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বাংলাদেশ ও পর্তুগালের মধ্যে ঐতিহাসিক সংযোগের কথা স্মরণ করেন। তি‌নি ব‌লেন, পারস্পরিক সুবিধার জন্য বর্তমান সময়ে শক্তিশালী সহযোগিতা গড়ে তোলার জন্য দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের উচিত ইতিহাসের এ ইতিবাচক উত্তরাধিকার গড়ে তোলা।

মো‌মেন বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মানবসম্পদ, ব্লু-ই‌কো‌নো‌মি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং দুই দে‌শের জনগ‌ণের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতার ওপর জোর দেন।

ড. মো‌মেন পর্তুগিজ সরকারকে ঢাকায় একটি আবাসিক মিশন খোলার অনু‌রোধ ক‌রেন। ঢাকায় সব ধরনের ভিসার আবেদন গ্রহণের জন্য কিছু ব্যবস্থা এবং ঢাকায় পর্যায়ক্রমিক কনস্যুলার সেবা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার প্রস্তাব দেন তি‌নি।

মো‌মেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার পাশাপাশি দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সম্পর্কে পর্তু‌গিজ মন্ত্রী‌কে অবহিত করেন।

এ সময় ড. মো‌মেন সদ্য উ‌দ্বোধন হওয়া নিজস্ব অর্থায়‌নে তৈ‌রি পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গ তু‌লে ধ‌রেন। তি‌নি ব‌লেন, এ সেতু বাংলাদেশের প্রতীক, যা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তৈ‌রি করা হ‌য়ে‌ছে।

পর্তুগিজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে তার সরকারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পর্তুগিজ অর্থনীতিতে অবদানের জন্য দেশ‌টিতে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসী সম্প্রদায়ের প্রশংসা করেন।

বৈঠ‌কে উভয়পক্ষ দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক স্তরে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের মতো জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একস‌ঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

উভয়পক্ষ ২০২৪ সা‌লে বাংলাদেশ-পর্তুগাল কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সফরসহ ভবিষ্যত সহযোগিতার এজেন্ডা নিয়েও আলোচনা করেন।

দুই মন্ত্রী আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়ন নিয়ে মতবিনিময় করেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে পর্তুগাল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্যকর ভূমিকা চান।

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন লিসবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম ও দূতাবা‌সের অন্য কর্মকর্তারা।

শেয়ার করুন