সাভারের আশুলিয়ায় ছাত্রের মারধরে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যার ছয় দিন পর হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে আবারও ক্লাস শুরু হয়েছে। শনিবার (২ জুলাই) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যোগ দেয়। এদিকে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম জিতুর বান্ধবী একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান।
তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষক হত্যার ঘটনার বিষয়ে সম্পৃক্ত থাকায় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছি। ইতোপূর্বে জিতুকে স্কুল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
ঘোষণা অনুযায়ী, শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার ক্লাস শুরু হয়। বেলা ১১টায় শুরু হয় মাধ্যমিক ও কলেজ শাখার পাঠদান। এরপর দুপুর ১ টায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে ওই কলেজের মূল ফটকে এবং সড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, ‘শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এরই মধ্যে পুলিশ ও র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্ত ছাত্র জিতু ও তার বাবা। তারা দুজনই বর্তমানে পুলিশি রিমান্ডে রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু লক্ষ্যে শনিবার সকাল থেকে ক্লাস শুরু করা হয়েছে। বর্তমানে স্বাভাবিক দিনের মতোই শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। তবে, শিক্ষার্থী উপস্থিতি কিছুটা কম রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীকাল আমাদের ঈদের ছুটি দেওয়া হবে। ১৬ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধ থাকবে। আসলে এখনও অনেকের আতঙ্ক কাটেনি। তার ওপর ঈদ চলে আসায় অনেক শিক্ষার্থী ঢাকার বাইরে গ্রামের বাড়ি চলে গেছে।’
কলেজটিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল মামুন কবির বলেন, ‘আমরা নিয়মিত টহলের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির আশপাশে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছি।’ রাস্তাঘাটে কোন আড্ডা কিংবা কিশোর গ্যাং এর উৎপাত দেখলেই তাদেরকে আটক করা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মাথায় আঘাত করে গুরুত্ব আহত করে কলেজ শাখার শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিওতে ভর্তি করা হলে সোমবার সকালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।