ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ হয়নি, মন ভালো নেই সেই বেলায়েতের

ঢাবি প্রতিনিধি

নিজের লালিত স্বপ্ন পূরণে ৫৫ বছর বয়সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন গাজীপুরের বেলায়েত শেখ। সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। প্রকাশিত ফলাফলে অকৃতকার্য হয়েছেন বেলায়েত।

ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ না পাওয়ায় ভীষণ মন খারাপ বেলায়েতের। অসুস্থ শরীর নিয়েই অধীর আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষায় ছিলেন ফলের। ফল প্রকাশের পর থেকেই স্বপ্নভঙ্গের ব্যথায় কাতর তিনি।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ঘ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ করেন। এতে পাস করেছেন ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ ভর্তিচ্ছু।

বেলায়েত শেখের ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তিনি ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএসহ ২৬ দশমিক ২ পেয়েছেন। এর মধ্যে এমসিকিউ অংশে ৮ পেয়েছেন। এর মধ্যে বাংলায় ২, ইংরেজিতে ২.৭৫ এবং সাধারণ জ্ঞান অংশে পেয়েছেন ৩.২৫। এমসিকিউতে ফেল করায় তার লিখিত অংশের খাতা মূল্যায়নের জন্যে বিবেচিত হয়নি। ফলে লিখিত অংশে কোনো নম্বর পাননি তিনি।

ফলাফল নিয়ে বেলায়েত বলেন, অনেক স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। তবে সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। আমার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট তো আমাকে পোড়াবেই। ভর্তি পরীক্ষা ভালোই দিয়েছিলাম। তবে এত কম নম্বর পাব তা ভাবিনি। আশা করেছিলাম পাস করব। তবে সেটাও হলো না। অনেক খারাপ লাগছে। আমার ভাগ্যটাই ভালো না।

বাবার অসুস্থতার কারণে পড়াশোনা ছেড়ে পরিবারের হাল ধরতে হয় বেলায়েত শেখকে। সময়টা ছিল ১৯৮৩ সাল। তিনি তখন এসএসসি পরীক্ষার্থী। ১৯৮৮ সালে তিনি আবারও এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সে বছর সারাদেশে বন্যার কারণে পরীক্ষা দিতে পারেননি। দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুপ্ত ইচ্ছাও আর আলোর মুখ দেখেনি।

নিজের অসমাপ্ত সেই স্বপ্ন ভাই ও সন্তানদের মাধ্যমে পূরণ করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সন্তানদের কেউই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাননি। তাই অনেকটা জেদ নিয়ে ২০১৭ সালে ৫০ বছর বয়সে ভর্তি হন নবম শ্রেণিতে। উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর ৫৫ বছর বয়সে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি।

শেয়ার করুন