যুদ্ধাপরাধ আদালত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি রাশিয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাশিয়ার মতো পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশকে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের জন্য শাস্তি দিতে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রচেষ্টায় মানবতা ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে মস্কো। রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

১৯৬২ সালে কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর মস্কো ও পশ্চিমের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটিয়েছে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন। ওই সংকটের সময় অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন বিশ্ব পারমাণবিক যুদ্ধের কিনারায় দাঁড়িয়েছে।

universel cardiac hospital

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক বোমাবর্ষণ এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতি ইঙ্গিত করে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, ‘প্রাচীন ভারতীয় জনগোষ্ঠীর পরাধীনতার সময় থেকে পুরো মার্কিন ইতিহাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ধারাবাহিকতার প্রতিনিধিত্ব করে’। এক টেলিগ্রাম পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এসব অপরাধের জন্য কাউকে দায়ী করা হয়েছে? সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের রক্তের সাগরের নিন্দা করেছে কোন ট্রাইব্যুনাল?’

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে চাইছে। এই প্রচেষ্টার প্রতিক্রিয়ায় মেদভেদেভ বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিজেকে বাইরে রেখে অন্যদের বিচার করতে চাওয়ার’ প্রচেষ্টা।

মেদভেদেভ বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার কার্যক্রমের জন্য আদালত কিংবা ট্রাইব্যুনালকে বিচার করতে চাওয়া নিরর্থক হবে এবং বৈশ্বিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়াবে। বর্তমানে রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান মেদভেদেভ বলেন, ‘সবচেয়ে বড় পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশকে শাস্তি দেওয়ার ধারণাটি অযৌক্তিক। আর এটি মানবতার অস্তিত্বের জন্য সম্ভাব্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে’।

পৃথিবীর পারমাণবিক অস্ত্রগুলোর ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। ফেডারেশন অব আমেরিকান সাইন্টিস্ট এর হিসেবে প্রতিটি দেশের সামরিক গুদামে প্রায় চার হাজার করে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে।

মেয়াদ সীমাবদ্ধতার কারণে ভ্লাদিমির পুতিন যখন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তখন ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দিমিত্রি মেদভেদেভ। পশ্চিমের দেশগুলো পুতিনের চেয়ে তাকে বেশি উদার মনে করে থাকে। তবে গত কয়েক মাসে ক্রেমলিনের অন্য কর্মকর্তাদের তুলনায় তাকেই বেশি কঠোর বার্তা দিতে শোনা গেছে।

সূত্র: আল জাজিরা

শেয়ার করুন