প্রেসিডেন্ট ভোটের নিয়ম পরিবর্তন হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। সাধারণ নাগরিকদের সমর্থনে (পপুলার ভোট) নয়, সে দেশের পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটেই আগামী সাত দিনের মধ্যে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হবে।
শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার ওয়াই অবেবর্ধনে শুক্রবার জানিয়েছেন, ২২৫ জন পার্লামেন্ট সদস্যের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটেরভিত্তিতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, পলাতক গোতাবায়া রাজপাকসের ছেড়ে যাওয়া প্রেসিডেন্টের পদ দখলের লড়াইয়ে রয়েছেন মূলত তিনজন। তারা হলেন প্রধানমন্ত্রী তথা কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে, পার্লামেন্টের বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমদাসা ও প্রবীণ সাংবাদিক তথা পার্লামেন্ট সদস্য ডলাস অলহাপেরুমনা।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেন সে দেশের প্রত্যেক নাগরিক। এত কম সময়ের মধ্যে সেই আয়োজন কার্যত অসম্ভব। এই পরিস্থিতিতে তাই পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটেরভিত্তিতেই অন্তর্বতী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে সর্বদল বৈঠকে।
২২৫ সদস্যের শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্টে রাজাপাকসের দল শ্রীলঙ্কা পড়ুজনা পেরমুনার (এসএলপিপি) সদস্য সংখ্যা ১০০। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী রনিলের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) ১ ও তালিম সংগঠন ইপিডিপির ২ সদস্য রয়েছেন। ছ’বারের প্রধানমন্ত্রী রনিল ভোটে লড়লে এদের বড় অংশের সমর্থন পেতে পারেন।
অন্য দিকে, সাজিথের দল সমগি জন বলবেগয়ার (এসজেবি) ৫৪ পার্লামেন্ট সদস্য রয়েছেন। বৃহত্তম তামিল দল টিএনএর ১০ সদস্যের সমর্থনও তার পাশে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অন্য ছোট দল ও ৪৫ জন স্বতন্ত্র সদস্যের সমর্থন নির্ণায়ক হতে পারে।
জনরোষ এড়াতে বুধবার ভোরে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেও এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীদের নিশানা হয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে গোতাবায়া ও তার ভাই পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের নেতৃত্বাধীন এসএলপিপির কতজন পার্লামেন্ট সদস্য রনিলকে ভোট দেবেন তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে উঠে আসছে এসএলপিপির পার্লামেন্ট সদস্য অলহাপেরুমনার নাম।
শাসক দলে দ্বন্দ্বের জেরে এসজেবি নেতা সাজিথ প্রেসিডেন্ট ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে যেতে পারেন বলে অনেকে মনে করছেন। সাজিথের বাবা রনসিংহে প্রেমদাসা শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদ থাকাকালীন ১৯৯৩ সালে তামিল জঙ্গিগোষ্ঠী এলটিটিইর বোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।