সেই নবজাতকের জন্য খুলল ব্যাংক হিসাব

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হকের নির্দেশে ট্রাকচাপায় মৃত মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হওয়া সেই নবজাতক কন্যা এবং তার দুই ভাই-বোনের সহায়তার জন্য একটি যৌথ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে।

সোমবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ত্রিশাল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্বাবধানে সোনালী ব্যাংকের ত্রিশাল শাখায় সঞ্চয়ী ব্যাংক একাউন্টটি খোলা হয়। রত্না আক্তার রহিমার নবজাতক ও অপর দুই সন্তানের সহায়তা হিসাব’শিরোনামে অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছে। যার নম্বর ‘৩৩২৪১০১০২৮৭২৮’। নবজাতক ও তার দুই ভাই-বোন নাবালক হওয়ায় তাদের দাদা এবং উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে অ্যাকাউন্টটি পরিচালিত হবে। এ পরিবারটিকে যারা সহায়তা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তারা এই অ্যাকাউন্ট নম্বরে সহায়তার অর্থ পাঠাতে পারেন।

universel cardiac hospital

এ সময় শিশুদের দেখভাল করার জন্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার সহায়তায় তাদের দাদি সুফিয়া আক্তারের জন্য একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে শিশুদের জন্য ভিজিডি কার্ডের ব্যবস্থা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, গত শনিবার বেলা আড়ায়টার দিকে ত্রিশালের কোর্টভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না আক্তার রহিমা (৩২), তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। প্রসবের নির্ধারিত সময় অতিক্রম হওয়ায় আলট্রাসনোগ্রাম করানোর জন্য স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়ার পথে ট্রাকচাপায় ঘটনাস্থলেই ওই তিনজন নিহত হন। তবে ওই সময় অলৌকিকভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হয় ফুটফুটে এক নবজাতক। নবজাতকটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় পুলিশ ও আশপাশের লোকজন। তারা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে নেওয়ার পর জানা যায় জীবিত আছে নবজাতক কন্যাটি।

সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য নবজাতকটিকে ময়মনসিংহ সদরের সিবিএমসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে নগরীর লাবীব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই নবজাতক। এখন শিশুটি শঙ্কামুক্ত আছে এবং আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ভাঙা হাড় জোড়া লাগাসহ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

শেয়ার করুন