ইসিকে অতিকথন পরিহার করতে হবে

সম্পাদকীয়

নির্বাচন কমিশন
ফাইল ছবি

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গত ১৭ জুলাই থেকে সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এগুলোর মধ্যে ছোট কয়েকটি রাজনৈতিক দলও রয়েছে। এ জাতীয় দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের বিষয়ে কতোটুকু লাভ-ক্ষতি হবে- এমন প্রশ্ন অমূলক নয়। ইসি অতীতে দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছে, এবারের সংলাপও আসলে সেই ধারাবাহিকতা।

তবে সংলাপে ইসির পক্ষে বিতর্কিত মন্তব্য কেন আসছে, মন্তব্যের রেশ ধরে রাজনীতির মাঠে কেন বিতর্ক সৃষ্টি করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, এসবের উদ্দেশ্য কী- প্রশ্নগুলো খুব যৌক্তিক। নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রিত একাধিক দলের সঙ্গে সংলাপ চলাকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) অপ্রসাঙ্গিক কথা বলেছেন।

universel cardiac hospital

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের প্রথম দিনে, অর্থাৎ গত ১৭ জুলাই জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে সংলাপের সময় প্রতিপক্ষকে মোকাবিলায় রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটের মাঠে শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায়, আপনাকে রাইফেল বা আরেকটি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে হবে।’ মত ও পথসহ জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে।

সিইসির বক্তব্য সমালোচনার জন্ম দিয়েছে বিভিন্ন অঙ্গনে। তাঁর বক্তব্যে বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকে, এমনকি টিআইবি’ও। সংস্থাটি বলছে, সিইসির বক্তব্য সহিংসতাকেই উসকে দেবে। যা ‘আত্মঘাতী, অপরিণামদর্শী ও অগ্রহণযোগ্য’। সমালোচনা জোরালো হওয়ার একপর্যায়ে সিইসি বলেন, তলোয়ার নিয়ে এলে প্রতিপক্ষকে রাইফেল নিয়ে দাঁড়ানোর কথাটি তিনি ‘কৌতুক’ করে বলেছিলেন। তবে তিনি এ বক্তব্যের জন্য অনুতপ্ত। এ জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন, আবার একইসঙ্গে গণমাধ্যমকেও দোষারোপ করেন।

আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ইসির মূল দায়িত্ব হচ্ছে দেশের সব নাগরিক যেন নিজের ভোট ইচ্ছানুযায়ী দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করা। ‘আমার ভোট আমি দেবো’- নাগিরকদের এই গণতান্ত্রিক অধিকারের বাস্তবায়ন করা। সরকার ব্যবস্থা বদলানো ইসির কাজ নয়। বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে থাকাও ইসির দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। তাই ইসিকে অতিকথন পরিহার করতে হবে।

শেয়ার করুন